রাবি হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী মনিরুজ্জামান মিলনকে আরেক সভাপতি প্রার্থী রাজিব হোসেন শিকদার ও তার অনুসারীরা মারধোর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হলের অতিথি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২২ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ৮টি হল সম্মেলনকে সামনে রেখে গত শনিবার রাতে সোহরাওয়ার্দী হলের টিভি রুমে হল শাখা ছাত্রলীগের আগ্রহী প্রার্থীদের নাম লিখে নেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বহিস্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান পলাশ। এতে ছাত্রলীগ কর্মী রাজিব হোসেন, মনিরুজ্জামান মিলন, এনায়েত কবিরসহ আরো অনেকে সভাপতি প্রার্থী হতে ইচ্ছুক বলে নাম লিখান। এ সময় রাজিব হোসেন উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর সামনে মিলনের সাথে দুর্ববহার করেন। রোববার সন্ধ্যায় মিলন সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক শাহজাহান স¤্রাটের কাছে সভাপতি প্রার্থীর সিভি জমা দেওয়ার পর রাতে মারধরের শিকার হন।
ভুক্তভোগী মনিরুজ্জামান মিলনের অভিযোগ, রোববার রাতে হলের অতিথি কক্ষে হল শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী বসে আলাপ-আলোচনা করছিল। সেখানে রাজিব ও তার অনুসারীরা বসে আছে-বিষয়টি বুঝতে না পেরে মিলন অতিথি কক্ষে ঢুকতে গিয়ে তাদের দেখতে পান। এরপর তিনি রাজিবের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে অতিথি কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে কোনো কারণ ছাড়াই রাজিব তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এরপর তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ কর্মী রাজিব, আব্দুল লতিফসহ আরো কয়েকজন মিলনের শার্টের কলার ধরে তাকে মারধর করে। এরপর তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে এসে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খালিদ হোসেন বিপ্লবকে জানান। মিলন বলেন, আমি রাজিবের প্রতিদ্বন্দ্বি সভাপতি প্রার্থী হয়েছি, এ জন্যেই আমাকে মারধর করা হয়েছে। এরআগে টিভি কক্ষে সমার সামনে অপমান করেছে রাজিব।

ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, আগামী ২২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ৮টি হলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়া কথা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
ছাত্রলীগের উপ-সাহিত্য সম্পাদক শাহজাহান স¤্রাট বলেন, মিলনসহ আরো কয়েকজন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক প্রার্থী হতে আমার কাছে ইতোমধ্যে সিভি জমা দিয়েছেন। এরমধ্যে মিলন সভাপতি প্রার্থী। ছাত্রলীগের দায়িত্বশীলরা আমার কাছে সিভি জমা দিতে বলায় অনেকে ইতোমধ্যে আমার কাছে সিভি জমা দিয়েছেন।
স¤্রাট আরও বলেন , মিলনকে মারধর করা হয়েছে বলে জেনেছি। এক সভাপতি প্রার্থী হয়ে আরেক সভাপতি প্রার্থীকে মারধর করার ঘটনাটি দুঃখজনক। এটি কোনোভাবে কাম্য নয়।
অভিযুক্ত রাজিব হোসেন বলেন, আমরা আমাদের ব্যক্তিগত গ্রুপ নিয়ে সেখানে আলোচনা করছিলাম। এ সময় মিলন সেখানে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে নিষেধ করলে সে চোখ গরম করে। তখন আমারও মাথা গরম ছিল, আমি ওঠে তার সামনে গেলে দুজনের কথাকাটাকাটি হয়।
মিলনকে মারধর করা হয়নি উল্লেখ করে রাজিব বলেন, ওখানে আমাদের অনেক ছেলে-পেলে ছিল। তাকে যদি মারা হতো, তাকে তো হাসপাতালে যাওয়া লাগতো।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খালিদ হোসেন বিপ্লব বলেন, মিলন বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।
উল্লেখ্য, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ছাত্রলীগের কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালে ১০ এপ্রিল।  কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণার পর ৪ এপ্রিল শুক্রবার হলের নিজ কক্ষে (২৩০) গুলি বিদ্ধ হয়ে খুন হয় রুস্তম আলী আকন্দ নামের এক সভাপতি প্রার্থী।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি/ ১৬-১১-১৫