রেলবস্তি উচ্ছেদের সময় মৃত্যুর গুজবে পুলিশের উপর হামলা > পাল্টা পুলিশের গুলিবর্ষণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকালে সোমবার পুলিশের সঙ্গে বস্তিবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে একটি গুজবকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কমপক্ষে ২৩ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়েছে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রেলওয়ে পাকশি জোনের বিভাগীয় ভু সম্পতি কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলষ্টেশনের আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের লক্ষে রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রোববার থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়।  এই উচ্ছেদ অভিযানে ছয় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আলীনগর রেল ক্রসিং এলাকা থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ কার্যক্রম দ্বিতীয় দিনের মত সোমবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন শৃংখলা বাহিনী সদস্যদের নিয়ে আবারও শুরু করে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ।
রেলওয়ে পুলিশের ওসি আকবর হোসেন জানান, বেলা ১২টার দিকে স্থাপনা উচ্ছেদকালে কিছু লোক বাধা দেয়। এক পর্যায়ে ‘অভিযানে দেয়াল চাপায় এক বস্তিবাসী মারা গেছে’ এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের সঙ্গে বস্তিবাসীর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। বস্তিবাসীরা পুলিশ ও রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লক্ষ্য করে ব্যাপক পরিমাণ পাথর ও ইটপাটকেল ছুড়ে। পুলিশও পাল্টা শর্টগানের পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। স্টেশন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এবং সাধারণ মানুষের মাঝে আত্মংক ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় আধাঘন্টা ধরে চলা সংঘর্ষে স্থানীয় ৪/৫ জন সামান্য আহত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, রেলওয়ে বস্তি এলাকায় উচ্ছেদ চলাকালে নিজ উদ্যোগে নিজের বাড়ি ভেঙ্গে নেয়ার সময় জার্মেন খানের ছেলে ফিরোজ আলী (৫০) নামের একজন দেয়াল চাপা পড়ে আহত হয়। দেয়ালটি তার পায়ের উপর পড়ে। এই আহত ব্যক্তিই রেলের অভিযানে মারা গেছেন এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। তারপর উত্তেজিত হয়ে উঠে এলাকাবাসী। ওই সূত্র জানায়, গুজবের পর ওই এলাকার বিভিন্ন দোকানের কর্মচারীরা প্রথমে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের লক্ষ করে ইট পাটকেল ও পাথর নিক্ষেপ শুরু করে।
এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রেলওয়ে ষ্টেশন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর আবারো উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। দুপুরে শহরের রেলক্রসিং পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাহারায় রেলস্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে যায়।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন এলাকার বস্তিতে বসবাসকারী পরিবারগুলো অভিযোগ করেছে, তাদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা না করে এবং পর্যাপ্ত সময় না দিয়েই উচ্ছেদ চালানো হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ভু সম্পত্তি কর্মকর্তা বলেন, ‘আগেই মাইকিং করে উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়টি জানানো হয়েছিল’।





চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৬-১১-১৫