ঝুপড়ি বাড়ির বীরঙ্গনা মালেকা এখন আর ভিক্ষা করবেন না

‘শেখের বেটি হাসিনা বীরঙ্গনা হিসেবে হামাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়ায় হামি এখন ভাতা পাবো। এ্যাতো দিন ভিক্ষ্যা কোইর‌্যা খাইতুন। এষর আর হামি কোন দিন ভিক্ষ্যা কোরবো না। দীর্ঘ ৪৪ বছর পর সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পাওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষার বীরঙ্গনা মালেকা বেগম অনুভুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে একথা বলেন।
মনাকষার ভুমিহীন মালেকা বেগম অন্যের জমির উপর তৈরী তার ঝুপড়ি বাড়িতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ ডটকমকে বলেন, ‘ মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা হামাকে নির্যাতন কোইর‌্যাছিল তারা ও তারঘে দোসরা এখনো আছে। জীবন বাঁচাতে যখন বাড়ি বাড়ি ভিক্ষ্যা কোরতুন তখন ওরা হামাকে ম্যালাই কোটু কথা কোহ্যাছে, টিটক্যারি মাইর‌্যাছে। সবকিছু মুখ বুজে সহ্য কোইর‌্যাছি। এখন ওরঘে বিচার চাই’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশব্যাপী যে ৪১ জন বীরঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে যে গেজেট প্রকাশ করেছে তাতে চাঁপাইনবাবঞ্জের ১১ জন রয়েছে। এই ১১ জনের মধ্যে একজন মালেকা বেগম। গেজেট তালিকায় মালেকা বেগমের নাম থাকায় সে বেজায় খুশী।
মালেকা বেগমের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের চৌকা মনাকষা গ্রামে। তার স্বামীর মৃত রুস্তম আলি ( ডাকনাম তোফু)। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালায় সে। পরের জমিতে লম্বা একটি ঝুপড়ি ঘরে স্বামী পরিত্যক্ত এক মেয়ে, অবিবাহত এক মেয়ে, ২ ছেলে ও  নাতি-নাতনীসহ  ১৩ জন সদস্যের পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছে মালেকা বেগম ও তার পরিবার।
মালেকা বেগম জানান, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন অক্টোবর মাসে মনাকষা বাজার থেকে বাড়ি ফিরার পথে দেশীয় রাজাকারদের ৫/৬ জন ধরে নিয়ে বনকুল গ্রামে নির্যাতন করে। পরের দিন আমার স্বামী রুস্তম আলি (তোফু) তাকে  উদ্ধার উদ্ধার করে নিয়ে আসে।  তিনি বলেন, ‘স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা শ্রী প্রভাত সিংহ ও  যুদ্ধাপরাধী মামলার বাদী বদিউর রহমান বুদ্ধুর আমাকে বীরঙ্গনার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য কাজ করেছেন। এ জন্য তাদের কাছে কৃতজ্ঞ’।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সফিকুল ইসলাম সফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ/ ১৫-১০-১৫

,