রাবি অগ্রণী ব্যাংকে গ্রাহক সেবা না পাওয়ার অভিযোগ

অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় শাখায় মান-সম্মত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেছে একাধিক গ্রাহক। বিভিন্ন অজুহাতে ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ রাখা , ভাংতি নোট না দেওয়ার ও গ্রাহকদের সাথে দূব্যর্বহারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এরফলে প্রতিনিয়ত বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও গ্রাহকদের সাথে বাকবিত- লেগেই থাকে ব্যাংক কর্মকর্তাদের। এছাড়া বিশ^বিদ্যালয় আগ্রণী ব্যাংকের এটিএম বুথ থাকলেও সর্বদাই যেন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সেবা পাচ্ছে না গ্রহকরা। এমনকি বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের র্দীঘদিন ধরে আলাদা কাউন্টার করার দাবি থাকলেও, সে ব্যাপারে কার্যকারী পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি কতৃপক্ষের।
তবে ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘হেড অফিস থেকে ইন্টারনেট সংযোগ সমস্যার কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। নিজেদের কোন গাফলতি নেই বলে উল্লেখ করেন তারা।’
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ধারার আগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় শাখা ১৯৬৫ সালের এপ্রিল মাসে স্থাপন করা হয়। বর্তমানে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১২ হাজারেরও অধিক। এই অধিক সংখ্যাক গ্রাহক ও বিশ^বিদ্যালয় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম থেকে শুরু করে যাবতীয় অর্থনৈতিক লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে হয়ে থাকে। কিন্তু এই অধিক সংখ্যক মানুষের মান-সম্মত সেবার ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের যেন কোন মাথা ব্যাথাই নেই।
বিশেষ করে ব্যাংকের অবকাঠমোগত উন্নয়নের অভিযোগে একাধিক সময় কার্যক্রম বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে। গত এক বছরের বিভিন্ন সময়ে কার্যক্রম বন্ধ রাখার আভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ব্যাংকের ইন্টারনেট সংযোগ সমস্যার কারণে গত কিছুদিন যাবৎ একাধিক সময় কার্যক্রম বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। ফলে দেখা দেয় দীর্ঘ লাইন, আর এই কারণে গ্রাহকদের সাথে প্রতিনিয়ত বাকবিত-ে জড়িয়ে পড়ে কর্মকর্তারা। সর্বশেষ গত সপ্তাহের মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে প্রায় দুপুর ২টা পর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আলাদা কাউন্টারের দীর্ঘ দিনের দাবি থাকলেও, এ ব্যাপারে তাদের কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় নি। ব্যাংকের ১৭টি কাউন্টার আছে, এর মধ্যে শিক্ষকদের জন্য দুইটি, একইভাবে কর্মকর্তাদের জন্য দুইটি। এছাড়া নগদ আদান-প্রদানের জন্য ১০টি ও তিন বিবিধ কাউন্টার আছে। শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের আলাদা ব্যবস্থা থাকলেও, শিক্ষার্থীদের জন্য নেই কোন আলাদা ব্যাবস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন অভিযোগ করেন, শিক্ষার্থীদের র্দীঘ দিন ধরে আলাদা কাউন্টার করার দাবি থাকলেও, সে ব্যাপারে কার্যত কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে সাধারণ গ্রাহকদের সাথে একই লাইনে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়, যা শিক্ষার্থীদের জন্য ভোগান্তির কারণ। এছাড়া এই শিক্ষার্থী আরো অভিযোগ করেন, বৃত্তির টাকা উত্তোলন করতে গেলেও, অনলাইন ব্যবস্থা না থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
তবে ব্যাংক কর্মকর্তাদের দাবি, বিবিধ কাউন্টারগুলো শিক্ষার্থীদের ভর্তিসহ যাবতীয় কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
এছাড়া ব্যাংক অফিসারদের বিরুদ্ধে এক হাজার ও পাঁচশত টাকার বাহিরে কোন ছোট নোট না দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। গ্রাহকদের সাথে এই নিয়ে ঝামেলা হলেও, মূলত বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটা প্রকট আকার ধারণ করে।
বিশ্ববিদ্যালয় সহায়ক কর্মচারী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন বিদ্যুৎ বলেন, ‘ব্যাংক থেকে মান-সম্মত সেবা পাচ্ছি না। প্রতিনিয়ত ব্যাংকে যেয়ে হতশার শিকার হয়েছি বিভিন্ন অজুহাতে। এছাড়া তিনি আরো অভিযোগ করেন, বিশ^বিদ্যালয় অগ্রণী ব্যাংকের বুথ থাকলেও একাধিকবার যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে টাকা উত্তোলন করতে ব্যর্থ হয়েছি।’
এ ব্যাপারে ফিসারীজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাবেয়া বিনতে সিরাজ বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা লাইনের ব্যবস্থা না থাকায় আমাদেরকে সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার সময় দীর্ঘ লাইন থাকলেও, কতৃপক্ষের যেন কোন মাথা ব্যাথা নেই।’
জানতে চাইলে রাবি শাখা অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড-এর সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও/ম্যানেজার) হিরেন্দ্র নাথ পাল বিভিন্ন সময় কার্যক্রম বন্ধ থাকার বিষয় স্বীকার করে বলেন, ‘হেড অফিসে সার্ভারে সমস্যার কারণে, শুধু রাবি শাখা নয় সারা বাংলাদেশে এই সমস্যা হচ্ছে।
তবে তিনি ভাংতি নোট না দেওয়ার ব্যাপারে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গত কিছুদিন যাবৎ ১০ টাকা ও ৫ টাকার নোট দিচ্ছে না, যার কারণে একটু সমস্যা দেখা দিচ্ছে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি/ ০৬-০৯-১৫