মনাকষায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ৪ হাজার জনকে আসামী করে মামলা > গ্রেফতার আত্মংকে গ্রামবাসী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নে ফুটবল খেলাকে কেন্্র করে গত ১৯ জুলাই রবিবার  থেকে বুধবার পর্যন্ত  তিন  গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ, বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ বিস্ফোরন দ্রব্য ব্যবহার আইনে ৫৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত প্রায় ৪ হাজার মানুষকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় গ্রেফতারের ভয়ে তিন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ রাতে গ্রামে থাকছেনা।
মনাকষা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মানুষ জানিয়েছে, গত ১৯জুলাই রবিবার বিকালে মনাকষা বিজিবি ক্যাম্পের সামনে ফুটবল মাঠে হাউসনগর, রানীনগর ও পারচৌকা গ্রামের যুবকদের মধ্যে ফুটবল  খেলাকে কেন্দ্র করে দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ওই দিন সংর্ঘষ থেমে গেলেও পরের দিন সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আবারো দুদলের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয় এবং  উভয় পক্ষ ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরন ঘটায়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেটের নেতৃত্বে যৌথবাহিনী প্রায় ৫০ রাউন্ড গুলি  বর্ষন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ সময় উভয় পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়। আটক হয় ১২জন।
এ পরিস্থিতিতে মনাকষা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। রবিবার থেকেই মনাকষা ও মাস্তান বাজারের প্রায় শতাধিক দোকানপাট বন্ধ আছে। যাতায়াত ব্যবস্থাও বাধাগ্রস্থ হওয়ায় বিকল্প পথে যেতে হচ্ছে। পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য উভয় পক্ষের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মঙ্গলবার বসে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করার সীদ্ধান্ত নিয়ে জীবনযাপন যাত্রা স্বাভাবিক করার জন্য মাইকিং করে । পরের দিন রানীনগর-পারচৌকা গ্রামের পক্ষ থেকে মনাকষা ইউপির সাবেক সদস্য শুকুদ্দী আলি মনাকষা ঈদগাহ মোড়ে আসলে হাউসনগর গ্রামের লোকজন তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আটকে রাখলে আবারো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী  কমিশনার (ভূমি) আফাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে যৌথবাহিনী চিরুনী অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এক্ষং ৬ জনকে আটক করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২/৩ কিলোমিটার পর্যন্ত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেক সাধারণ মানুষও নির্যাতনের শিকার হয় বলে এলাকার মানুষ জানায়।
এদিকে সোমবার পুলিশ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে  অজ্ঞাত প্রায় ৪ হাজার মানুষকে আসামী করে মামলা করায় কয়েকদিন থেকে হাউসনগর, চৌধুরী টোলা, রানীনগর,পারচৌকা, সিংনগর সহ ৭/৮টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার পুরুষ গ্রাম ছাড়া হয়ে বাইরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ফলে প্রতিটি  পরিবারেই আতঙ্ক বিরাজ করছে।এদিকে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। সোমবার ঘটনার সময় মনাকষা ঈদগাহ মোড়ে জেমের আমসহ ৯০টি ক্যারেট, জাকারিয়ার ৮০ মন আমসহ একটি ট্রাক ছিনতাই, নাজিমের একটি আমের আড়ত লুটপাটসহ কয়েকটি দোকানপাট ভাংচুর হয়েছে। যারা আম ব্যবসায়ী তাদের  বাগানের আম চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী ঠিকমত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না।
তিন গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনাকে ঘিরে রানীনগর-পারচৌকা বাজারে আওয়ামীলীগ নেতা এ্যাডভোকেট আতাউর রহমান ও দূর্লভপুর ইউপি চেয়ারম্যান  আবু আহমেদ নজমুল কবির এলাকার লোকজনকে নিয়ে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত  হয়েছে। এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমএম ময়নুল ইসলাম জানান যেহেতু বেআইনীভাবে ককটেল/ বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে সেহেতু থানায় মামলা হয়েছে এবং  আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সফিকুল ইসলাম সফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ/ ২৩-০৭-১৫

,