মোবারকপুরে স্বাস্থ্য বিভাগের জমিতে নির্মাণ হচ্ছে মার্কেট !

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের টিকরী বাজারে স্বাস্থ্য বিভাগের জমির উপর মার্কেট  নির্মাণ করছে মোবারকপুর ইউনিয়ন পরিষদ। তবে, ইউপি চেয়ারম্যান দাবি করেছেন ওই জমির মালিক ইউনিয়ন পরিষদ। আবার স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে দানসুত্রে জমির মালিক ‘মোবারকপুর হাসপাতাল’। এদিকে, অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে গোপনে নির্মাণ করা হচেছ এই মার্কেট।
মোবারকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ জানায়, নামোটিকরী মৌজায় ২নং খতিয়ানে ২১৬ দাগে ২৬ শতক জমি (১৯৭২ সালে জমির রেকর্ড মোতাবেক)  মোবারকপুর ইউনিয়ন পরিষদের। সে মোতাবেকই ইউনিয়ন পরিষদের এক সভার সর্বসম্মতিক্রমে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন মার্কেটের ঘর যাদের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তাদের কাছে থেকে পর্যায় ক্রমে জন প্রতি ৩ লাখ টাকা করে নিয়ে মার্কেট তৈরী করা হচ্ছে। তাছাড়া মার্কেটের দ্বোতলায় অগ্রণী ব্যাংক মোবারকপুর শাখার অফিস ভাড়া দেয়া হবে বলে তিনি জানান। তবে, মোবারকপুর ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য মোসাঃ নুরজাহান বেগম জানান সভায় সব সদস্য উপস্থিত না থাকলেও পরে সবার স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হয়েছে।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তড়িৎ কুমার সাহা জানান, ১৯৬৪ সালে জিয়াউর রহমানের ছেলে কলিমুদ্দিন ও জবেদ আলী স্ত্রী হকসাবি বিবি নামোটিকরী মৌজার ৩৮ খতিয়ানে, ২৩৭ ও ২৩৮ দাগে মোট ৮৪ শতক জমি মোবারকপুর হাসপাতালের জন্য দান করেন। বর্তমানে ওই দানকৃত জমির মধ্যে ৫০ শতক জমি স্বাস্থ্য বিভাগের দখলে রয়েছে। কিন্তু ১৯৭২ সালে জরিপ বিভাগ স্বাস্থ্য বিভাগের নামে ৮৪ শতক জমি রেকর্ড না করে মাত্র ৮ শতক জমি রেকর্ডে উল্লেখ করে।
সূত্র মতে জানা যায়, ১৯৭১-১৯৭৪ সাল পর্যন্ত মোবারকপুর ইউনিয়নে সরকারি নিয়োগকৃত জারজিস মিয়া চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে ১৯৭২ সালে জমি জরিপের সময় গোপনে ইউনিয়ন পরিষদের নামে ২৬ শতক জমি রেকর্ড করে নেয় জারজিস মিয়া (ওই জমির কোন দলিল পত্র ইউনিয়ন পরিষদে নেই)। ১৯৭৪ সালে কলিমুদ্দিনের ছেলে সেকান্দার আলী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করলেও তার পিতার দানকৃত স্বাস্থ্য বিভাগের জমি ইউনিয়ন পরিষদের রেকর্ড সর্ম্পকে জানতেন না বলে এলাকা সূত্রে জানা যায়। পরে ১৯২৮ সালে মকশেদ আলী মিয়া ওই ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। সেই সময় অস্থায়ী ভাবে স্বাস্থ্য বিভাগের জমির উপর ইউনিয়ন পরিষদের অফিস ঘর নির্মাণ করেন বলে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়। ডাক্তার তড়িৎ কুমার সাহা আরো জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. আলাউদ্দিনের নির্দেশ মোতাবেক গত ১৫ই জুন ঘটনা স্থলে গিয়ে তদন্ত করা হয়েছে এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও এ পর্যন্ত কাজ বন্ধ করেনি। তিনি আরও জানান, তারা বিধি ভঙ্গ করে স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের স্থানেই অবৈধ ভাবে জোর পূর্বক মার্কেট নির্মাণ করছেন।
বৃহস্পতিবার মার্কেট নির্মাণ বন্ধ রাখার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা দপ্তর থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ ইরতিজা আহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বিধি অনুযায়ী  ইউনিয়ন পরিষদের কোন উন্নয়ন মূলক কাজে  উপজেলা প্রশাসনকে জানাতে হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সফিকুল ইসলমা সফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ/ ১৮-০৬-১৫

,