আবারও কালবৈশাখীর ছোবল > শহরে বিদ্যুৎ বিপর্যয় > ভোলাহাটে আমের ব্যাপক ক্ষতি

গেল মাসের কালবৈশাখীর তান্ডবের পর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবারও কালবৈশাখী ঝড় আঘাত করেছে। ঝড়ে জেলাজুড়ে অন্তত ২০ জন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে।
রাত ১২টার দিকে হটাৎ বিকট শব্দ করে ঝড় শুরু হয়। প্রথমে হালকা আঘাত হলেও পরের দু’টি আঘাত ছিল ব্যাপক। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বহু কাঁচা ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়। বাড়ি ঘরগুলো টিনে চালা উড়ে যায়। এসব এলাকার মানুষকে বুধবার খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে শিবগঞ্জের উজিরপুর ইউনিয়নে। দক্ষিণ উজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি ঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে।
উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকারিয়া হোসেন জানান, উজিরপুরের প্রায় আড়াই শ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এদিকে, ঝড়ের তান্ডবে আবারও বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। রাত থেকেই বন্ধ হয়ে যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ। বুধবার ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হয়। দুপুরের দিকে অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও শহরের নিউ মার্কেট, ক্লাবসুপার মার্কেট, কাঠালবাগিচা, পাঠানপাড়ার একাংশসহ আশেপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল সন্ধ্যা পর্যন্ত। সন্ধ্যা ৬টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আবাসিক প্রকৌশলী (নির্বাহী) জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ ডটকমকে বলেন, ‘একদল বিদ্যুৎ শ্রমিকের দিনভর পরিশ্রমের ফলে বিদ্ধস্ত এলাকাগুলো মেরামত শেষ হয়েছে। এখন শুধু জাম্পার লাগানো বাকি রয়েছে। আশা করা যায় আধাঘন্টার মধ্যে মুল শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা যাবে’। তিনি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের নিউ মার্কেটের সামনে গাছ পড়ে একটি পোল পড়ে যাওয়াসহ আর ৩/৪টি এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
তিনি বরেল, ‘ সড়কের ধারের গাছের কারণেই বারবার বিদ্যুতের এ বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে। আমাদের যে বরাদ্দ তা দিয়ে ডালপালা ছাটাই করা যাবে। কিন্তু ডাল বা গাছ কাটারতো বরাদ্দ নেই’। তিনি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে পৌরসভা, এলজিইডি, জেলা প্রশাসন, হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি কলেজসহ ১৩ টি প্রতিষ্ঠানকে পত্র দিয়ে সড়কের ধারে থাকা তাদের গাছগুলো নিজেদের উদ্যোগে কেটে নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু পাঠানো ওই চিঠির কার্যকারিতা চোখে পড়েনা।

ভোলাহাটে আমের ব্যাপক ক্ষতি
ভোলাহাট থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক তাজামুল হক আরাফাত জানান, ভোলাহাটে কাল বৈশাখী ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে দক্ষিণ - পশ্চিম দিক থেকে ধেয়ে আসা কাল বৈশাখী ঝড়ের তান্ডকে আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। তারা বলেন, আম বাগানের প্রায় ১০শতাংশ আম পড়ে গেছে। পড়ে যাওয়া আমগুলো ক্রয়ের জন্য উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পসরা সাজিয়ে ২/৩ টাকা কেজি দরে ফড়িয়াদের ক্রয় করতে দেখা গেছে। এ দিকে কাল বৈশাখী ঝড় তান্ডব চালিয়ে আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় আম ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এলাকাবাসি জানায়, মঙ্গলবার কাল বৈশাখী ঝড়ে চরধরমপুর শান্তি বাজার হতে ৫শত মন আম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ট্রাকে করে যায়। এ দিকে মেডিকেল মোড়, কলেজ গেট, হলিদাগাছি মোড়, বাসষ্টান্ড, পোল্লাডাংগার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে, ময়ামারী মোড়, মুশরীভূজা বাজার, ইমামানগর বাজার, বড়গাছী বাজার, ফুটানী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকাতেও ঝড়ে পড়া শত শত মন আম কিনেছেন ব্যবসায়ীরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২২-০৪-১৫