৭০-৮০ কিলোমিটার বেগের হটাৎ কালবৈশাখী ঝড় > অন্ধকারে ডুবে আছে পুরো চাঁপাইনবাবগঞ্জ > শহরের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ চালু (আপডেটসহ)

কালবৈশাখী ঝড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বহু টিনের চালার স্থাপনা ও গাছপালা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঝড়ে কোন প্রাণহানীর ঘটনা না ঘটলেও ক্ষয়ক্ষাতি হয়েছে ব্যাপক। ভেঙ্গে পড়েছে জেলার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। বিকেলের ঝড়ের পর থেকে অন্ধকারে ডুবে আছে পুরো চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তবে রাত ১০টার দিকে পাওয়ার হাউস মোড়, হুজরাপুর, উদয়ন মোড় এলাকা এবং রাত সাড়ে ১০দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের কোর্ট এলাকা পাঠানপাড়ায় বিদ্যুাৎ সরবরাহ চালু হয়েছে। রাতের বেলায় শহরের অন্যান্য অংশ ভুতুরে শহরে পরিণত হয়ে আছে।
শনিবার দুপুরের পর থেকে মেঘলা আকাশ থাকলেও বিকেল পৌনে ৫টার দিকে হটাৎকরে ঝড় শুরু হয়। স্থানীয়রা জানান, বিমান চলাচলের মত শব্দ করে হটাৎ শুরু হওয়া ঝড় আঘাত হানে একের পর এক জনপদে। এতে চঁাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পোল্লাডাঙ্গা, আজাইপুর, শিবতলা, বটতলাহাট, রাজারামপুর, হরিপুর, দারিয়াপুর, হরিপুর এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বহু আমগাছসহ অন্যান্য গাছপালা উপড়ে পড়ে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, শিবগঞ্জের পাকা, সদররের নারায়ণপুর, মহারাজপুর, বারোঘরিয়া হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের উপর দিয়ে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়টি। ঝড় আর সেই সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গুটি অবস্থাতেই প্রচুর আম ঝড়ে পড়েছে।
ঝড়ে এ পর্যন্ত প্রাণহানীর ঘটনা না ঘটলেও বহ বাড়িঘর বিধ্বস্থ ও টিনের চালা উড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকাঘুরে দেখা গেছে ঝড়ের তান্ডবে বহু গাছ বিদ্ধস্ত হয়ে সড়কের উপর পড়ে আছে। শহরের ক্লাব সুপার মার্কেট, শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজসহ কয়েকটি স্থানের বড় বড় বিল বোর্ড় পড়ে গেছে। ক্লাব সুপার মার্কেটের বিল বোর্ড টি ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় ঝুলে রয়েছে।
সড়কের ধারের গাছ পালা বিদ্যুতের তারের উপর পড়ে বহু স্থানের তার ছিড়ে পড়ে গেছে। কোথাও কোথাও বিদ্যুতের পোল উপরে গেছে। ফলে ঝড়ের পর থেকে বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বেশ কয়েক নাগরিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গেল একযুগের মধ্যে এমন গতিবেগের ঝড় তারা দেখেনি। এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবহাওয়া অফিস না থাকায় ঝড়ের গতি সর্ম্পকে কোন তথ্য পাওযা যায়নি। তবে কৃষি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঝড়ের গতি ঘন্টা ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ছিল বলে তার ধারণা। তিনি জানান, ঝড়ে গতি ৬০ কিলোমিটারের নিচে থাকলে ডালপালা ভাঙ্গবেনা। যেহেতু প্রচুর ডালাপালা ভেঙ্গেছে এবং গাছাপালা উপড়ে পড়েছে সেহেত গতি ছিল ব্যাপক।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে আবাসিক প্রকৌশলী নির্বাহী জাকির হোসেন জানিয়েছেন, ঝড়ে বহু এলাকার বিদ্যুতের পোল পড়ে গেছে এবং ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের লাইল ছিড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা অনেক স্বল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে, কখন নাগাদ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেন নি।
শহরে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্থ হয়েছে। বিভিন্ন এলকায় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে আমাদের শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর ও নাচোল প্রতিবেদক জানিয়েছেন, শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুরেও বহু বাড়িঘর ও গাছপালা ঝড়ে উপড়ে পড়েছে। সেখানেও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। পাকা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ইসলাম হোসেন রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ ডটকমকে জানান, ঝড়ে পাকা ইউনিয়নের বহ কাচা বাড়ি ঘর বিধ্বস্থ হয়েছে।




চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৪-০৪-১৫