পদ্মায় হটাৎ পানি তবুও হাহাকার ॥ পাগলা দু’দশক পর ফিরে পেয়েছে হারানো যৌবন
ভারতের গঙ্গা বাংলাদেশে পদ্মা হয়ে ঢুকেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়েই। ভারতের মনোহরপুরের নীমতিতা আর বাংলাদেশের পাকার আইউব বিশ্বাসের টোলা পয়েন্ট দিয়ে ঢুকা পদ্মায় গেল এক সপ্তাহে হটাৎকরেই পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। মাত্র ৬ দিনে ৭৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়। উজান থেকে হটাৎ আসা পানি আবারও কমতে শুরু করলেও এ সময়ের পানি বৃদ্ধিকে সংশ্লিষ্টরা দেখছেন ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবেই। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের আব্দুস সালামের বেড়ে উঠা এক সময়ের খর¯্রােতা পদ্মার কোল ঘেঁসেই। ৫৫ বছর বয়সী সালামের দু’চোখে পদ্মার বিশালতা ধরা দিয়েছে, ধরা দিয়েছে ধু ধু বালুচরও। শুস্ক মৌসুমে পদ্মার বুকজুড়ে যেখানে সালাম শুধুই বালুরচর দেখে অভ্যাস্ত সেখানে হটাৎ পানি দেখে বিস্মিত তিনি। সালাম বলেন, ‘ কিশোর বয়স থেকেই দেখে আসছি বর্ষাকালে ভরা পদ্মার আগ্রাসীরূপ। আবার ফাল্গুন-চৈত্র মাসের ধু ধু বালুচর। এসময় চরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া শাখাগুলো দিয়ে পায়ে হেটেই পার হওয়া যেত। কিন্তু গেল সপ্তাহের পানি বৃদ্ধিতে সেগুলোতে স্থানভেদে কোমার পানি হয়েছিল। কিন্তু আবারও কমে তা হাটুর দিকেই আগাচ্ছে’। তিনি বলেন, ‘ পদ্মার শাখাগুলোতে হটাৎ পাওয়া পানিতে নেই কোন প্রবাহ। বিশাল পদ্মাজুড়ে বালু আর বালু। পানির হাহাকার লেগেই আছে’। পদ্মা তীরবর্তী নারায়ণপুর, দূর্লোভপুর, রাধাকান্তপুর, দশরশিয়া এলাকার সাধারণ মানুষ জানিয়েছে, ভারতের পানি প্রত্যাহার করে নেয়া ও জলবাযূর বিরূপ প্রভাবের কারণে খর¯্রােতা পদ্মা এখন ক্রমাগত শুকিয়ে পানির জন্য ধুকছে। প্রমত্তা পদ্মা এখন মৃতপ্রায়। তবে এসব এলাকার মানুষ জানিয়েছে, কিছু কিছু এলাকায় লাভই হয়েছে। দশরশিয়ার নিচে পদ্মা পয়েন্টে এখন প্রায় দু’ মানুষ পানি। যা আগে এ সময় কল্পনায় করা যেত না। এই পানি ক’দিন থাকে সেটিই এখন দেখার বিষয়। তারা জানান, শুষ্ক মৌসুমে পদ্মায় পানি থাকা না থাকাটা ভারতের ‘মর্জি’র উপর নির্ভর করছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে হাটৎ পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। ১০ মার্চ পাকা পয়েন্টে পানি প্রবাহ ছিল ১২ দশমিক ৮৭ সেন্টিমিটারে। যা বাড়তে বাড়তে ১৬ মার্চ দুপুরে দিয়ে দঁড়ায় ১৩ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটারে। পাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াটার লেভেল মাপার দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী নাজির হোসেন বলেন, ‘ ১০ তারিখ সন্ধ্যায় পানি বাড়া শুরু হয়। তবে, ১৬ তারিখ থেকে তা আবার কমতে শুরু করেছে’। তিনি জানান, ১৬ মার্চ থেকে ২১ মার্চ সকাল পর্যন্ত পানি কমেছে ৪৯ সেন্টিমিটার। ২১ মার্চ সকালে পাকায় পানি প্রবাহ ছিল ১৩ দশমিক ১১ সেন্টিমিটারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, ১৯৯৮ সালের ৭ সেপ্টেমর তারিখে পদ্মায় সর্বচ্চো পানি ছিল ২৪.১৪ মিটার। পরে এ পরিমাণ পানি আর পাওয়া যায়নি। পদ্মায় জুন মাস নাগাদ পানি প্রবাহ কমে একেবারেই নিচে নেমে আসে। ২০১১ সালের জুন মাসে পদ্মায় সর্বনিম্ন পানির লেভেল ছিল ১৩.৩১ মিটার। আর এ বছর মার্চেই পানি প্রবাহ নেমে এসেছে ১৩ এর নিচে। বোর্ডের সংশ্লিটারা শংকা করছেন জুন নাগাদ ১১ তে নেমে আশার শংকা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে পদ্মার প্রবেশমুখ আইউব বিশ্বাসের টোলা থেকে মাত্র ১৮ কিলো মিটার দূরে ভারতের ফারাক্কার বাধের একটি গেটের ত্রুটির কারণে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। সীমান্ত এলাকার মানুষরাও এমন তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আরেক প্রধান নদী পাগলা বছরের পর বছর ধরে পানি প্রবাহ না পেয়ে শুকিয়ে মরতে বসেছিল। তবে, সেই পাগলা এখন ফিরে পেয়েছে তার হারানো যৌবন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রানীহাটির প্রবীণ সাংবাদিক তসলিম উদ্দীন বলেন, ‘ এ অঞ্চলের মানুষের পদ্মা ও পাগলা নদীকের নিয়ে অনেক সুখের দিন কাটতো। জীবন জীবিকায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতো নদী দু’টি। কিন্তু একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে পদ্মা-পাগলা একসঙ্গেই মরতে বসেছিল। পদ্মা এখনও মৃতপ্রায় তবে পাগলায় এখন ভরাপানি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পাগলা পাড়ের মানুষ নৌকায় নদী পার হতো। এরপর পানি কমতে কমতে শুষ্ক মৌসুমে একেবারেই শুকিয়ে যাওয়ায় নদী পারাপারে আর নৌকা লাগতো না। কিন্তু এবছর এখন মানুষ পাগলা নদী পার হয় নৌকাযোগেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২২-০৩-১৫
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে হাটৎ পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। ১০ মার্চ পাকা পয়েন্টে পানি প্রবাহ ছিল ১২ দশমিক ৮৭ সেন্টিমিটারে। যা বাড়তে বাড়তে ১৬ মার্চ দুপুরে দিয়ে দঁড়ায় ১৩ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটারে। পাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াটার লেভেল মাপার দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী নাজির হোসেন বলেন, ‘ ১০ তারিখ সন্ধ্যায় পানি বাড়া শুরু হয়। তবে, ১৬ তারিখ থেকে তা আবার কমতে শুরু করেছে’। তিনি জানান, ১৬ মার্চ থেকে ২১ মার্চ সকাল পর্যন্ত পানি কমেছে ৪৯ সেন্টিমিটার। ২১ মার্চ সকালে পাকায় পানি প্রবাহ ছিল ১৩ দশমিক ১১ সেন্টিমিটারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, ১৯৯৮ সালের ৭ সেপ্টেমর তারিখে পদ্মায় সর্বচ্চো পানি ছিল ২৪.১৪ মিটার। পরে এ পরিমাণ পানি আর পাওয়া যায়নি। পদ্মায় জুন মাস নাগাদ পানি প্রবাহ কমে একেবারেই নিচে নেমে আসে। ২০১১ সালের জুন মাসে পদ্মায় সর্বনিম্ন পানির লেভেল ছিল ১৩.৩১ মিটার। আর এ বছর মার্চেই পানি প্রবাহ নেমে এসেছে ১৩ এর নিচে। বোর্ডের সংশ্লিটারা শংকা করছেন জুন নাগাদ ১১ তে নেমে আশার শংকা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে পদ্মার প্রবেশমুখ আইউব বিশ্বাসের টোলা থেকে মাত্র ১৮ কিলো মিটার দূরে ভারতের ফারাক্কার বাধের একটি গেটের ত্রুটির কারণে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। সীমান্ত এলাকার মানুষরাও এমন তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আরেক প্রধান নদী পাগলা বছরের পর বছর ধরে পানি প্রবাহ না পেয়ে শুকিয়ে মরতে বসেছিল। তবে, সেই পাগলা এখন ফিরে পেয়েছে তার হারানো যৌবন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রানীহাটির প্রবীণ সাংবাদিক তসলিম উদ্দীন বলেন, ‘ এ অঞ্চলের মানুষের পদ্মা ও পাগলা নদীকের নিয়ে অনেক সুখের দিন কাটতো। জীবন জীবিকায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতো নদী দু’টি। কিন্তু একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে পদ্মা-পাগলা একসঙ্গেই মরতে বসেছিল। পদ্মা এখনও মৃতপ্রায় তবে পাগলায় এখন ভরাপানি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পাগলা পাড়ের মানুষ নৌকায় নদী পার হতো। এরপর পানি কমতে কমতে শুষ্ক মৌসুমে একেবারেই শুকিয়ে যাওয়ায় নদী পারাপারে আর নৌকা লাগতো না। কিন্তু এবছর এখন মানুষ পাগলা নদী পার হয় নৌকাযোগেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২২-০৩-১৫