কেন্দ্র সচিবের গাফেলতি ॥ হরিমোহন কেন্দ্রে এসএসসি’র পরীক্ষা নেয়া হলো ভিন্ন প্রশ্নপত্রে

শনিবার অনুষ্ঠিত এসএসসি ইংরেজি (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে। পরীক্ষা গ্রহণ শেষে দু’কেন্দ্রের প্রশ্নপত্র ভিন্ন ভিন্ন হওয়ার বিষয়টি অভিভাবকদের গোচরে আসলে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। ধর্ণা দিতে শুরু করেন গণমাধ্যম কর্মীসহ পরীক্ষা কেন্দ্রে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রথা অনুযায়ী স্ব স্ব পরীক্ষা কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা আগে থেকেই জেলার টেজারী শাখায় জমা থাকে। কেন্দ্রগুলির ওই পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনুযাযী প্রতিদিন পরীক্ষা শুরুর প্রায় দেড় ঘন্টা আগে পরীক্ষা কেন্দ্র সচিবকে টেজারীর দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তার উপস্থিতি নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত সেটের প্রশ্নপত্র প্রদান করা হয়। ওই সুত্র জানায়, শনিবার টেজারীতে থাকা চার সেট প্রশ্নপত্রের মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণের নির্ধারিত সেট হয় ‘খ’। কিন্তু প্রশ্নপত্রের বাক্স থেকে প্রশ্নপত্র বের করার সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরীক্ষা কেন্দ্র নম্বর ১৫২-বিসহ সব কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয় ‘খ’ আর পরীক্ষা কেন্দ্র নম্বর ১৫২-এ কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র প্রদান করা হয় ‘ক’। ওই সূত্র জানায়, প্রশ্নপত্র বুঝে নেয়ার সময় কেন্দ্র সচিবের গাফেলতির কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।
টেজারী থেকে নিয়ে আসা প্রশ্নপত্র ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরীক্ষা কেন্দ্র নম্বর ১৫২-বি (সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও সাব কেন্দ্র ফুলকুড়ি ইসলামী একাডেমি)র পরীক্ষার্থীরা ‘খ’ সেটে পরীক্ষা দিয়ে এবং পরীক্ষা কেন্দ্র নম্বর ১২৫-এ ( হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও সাব কেন্দ্র গ্রীণভিউ উচ্চ বিদ্যালয়)র পরীক্ষার্থীরা ‘ক’ সেটে পরীক্ষা দিয়ে বের হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পরীক্ষার্থীদের অভিভাববকরা। বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওই কেন্দ্রে মোট ১ হাজার ৩৭৯ জন পরীক্ষার্থী ‘ক’ সেট প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেন।
ওই সূত্র জানিয়েছে, পরীক্ষা গ্রহণ শেষে রেলযোগে প্রশ্নের উত্তর পত্র বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেয়ার নিয়ম থাকলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের হরিমোহন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণের ঘটনা ঘটায় বোর্ড কর্তৃপক্ষ ওই কেন্দ্রের ্উতরপত্রগুলো নিজ দায়িত্বে নিয়ে আসার জন্য কেন্দ্র সচিবকে নির্দেশ দিয়েছে।
এ ব্যাপারে পরীক্ষা কেন্দ্র নম্বর ১২৫-এ হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব আব্দুল লতিফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘ এখন কোন কথা বলবো না’ বলে এড়িয়ে যান।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে দুপুরের পর থেকে কয়েক দফা যোগাযোগ করার জন্য সেল ফোনে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক ডা. গোলাম রাব্বানী চাঁপাইনবাবগঞ্জনিউজ ডটকমকে বলেন, ‘ওই দু’ প্রশ্নপত্রের মোট ১৫ টি প্রশ্নের মধ্যে একটির আংশিক মিল ছাড়া বাকীগুলো ছিল ভিন্ন’। তিনি বলেন, ‘ প্রশ্নপত্র ভিন্ন না হলে আমার মেয়ে আরো ভাল পরীক্ষা দিতে পারতো। কারণ ‘খ’ সেটের প্রশ্নপত্রে তার ‘কমন’ ছিল বেশী’।
অন্যদিকে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের বিষয়টি তুলে ধরা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘ এ বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন হবার তেমন কারণ নেই। বিষয়টি যেহেতু বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এখন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়ে উত্তর পত্রগুলো ওই প্রশ্নপত্রের আলোকে মূল্যায়ন করলে কোন সমস্যা হবে না’।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৪-০২-১৫

,