অবরোধের দ্বিতীয় দিন ॥ নোয়াখালিতে পুলিশের গুলিতে নিহত ২

২০ দলীয় জোটের অনির্দিষ্টকালের অবোরোধের ২য় দিনে বুধবার বিকালে নোয়াখালী জেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চৌমুহনী বাজারে বিএনপি জামায়াত মিছিল থেকে তাণ্ডব শুরু করলে পুলিশ গুলি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে রুবেল (৩০) নামে এক দোকানী ও মহসীন (২০) নিহত হন। এ ছাড়া এ ঘটনায় পুলিশসহ ২০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সিএনজি চালক যুবদল কর্মী জাহাঙ্গীর (৩৬) ও শাহাবউদ্দিনকে (২০) নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার নোয়াখালী জেলায় সকাল সন্ধ্যা হরতাল আহবান করেছে স্থানীয় ২০ দলীয় জোট।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল সাড়ে ৪টায় চৌমুহনীর রেল গেইট থেকে অবোরোধের সমর্থনে ২০ দলীয় জোট মিছিল বের করে। মিছিলটি চৌমুহনী পূর্ব বাজার হয়ে পুনরায় রেল গেইটে আসার পথে মিছিল থেকে বিএনপি জামাতের বিক্ষুদ্ধ কিছু কর্মী পুলিশের উপর ঢিল মারে। একই সময়ে তারা বাজারে খুলে রাখা দোকান পাটে হামলা চালায়, তারা বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলসহ পুলিশের ২টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। চৌমুহনী বাজারে তাণ্ডব সৃষ্টি করে। এ সময়ে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা শহর থেকে পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়।
এ সময়ে দ্রুত দোকান বন্ধ করতে গিয়ে রুবেল নামের এক দোকানী গুলিবৃদ্ধ হয় তাকে নোয়াখালী আবদূল মালেক উকিল হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ছাড়া জাহাঙ্গীর ও শাহাবউদ্দিন নামে দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত জসিম উদ্দিন, শহর দারোগা টিএসআই সাইফুল শিকদার, কনস্টেবল আহত হয়। তাদের পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চৌমুহনী পৌর বিএনপির সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন জানান, পুলিশ ও বিজিবি তাদের শান্তিপূর্ন মিছিলে গুলি ছুড়ে। এতে তাদের এক কর্মীসহ ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
অপরদিকে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইনুল হক জানান, বিএনপি জামায়াতের জঙ্গি মিছিল থেকে পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, এবং পুলিশের দুটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ বাধ্য হয়ে গুলি ছোড়ে। তবে কি পরিমাণ গুলি ছোড়া হয়েছে তা জানাতে পারেননি তিনি।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার ইলিয়াস শরিফ জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। সেখানে তিনি নিজেই অবস্থান করছেন অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে। তারা মিছিলের নামে তাণ্ডব চালিয়ে পুলিশ সদস্যদের আহত করেছে। পুলিশের মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দিয়েছে, সন্ত্রাসীদের ধরার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নোয়াখালী আবদুল মারেক উকিল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাক্তার ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, গুলিবিদ্ধ জাহাঙ্গীরের অবস্থা আশংকজনক।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ আজাদ জানান, চৌমুহনীতে পুলিশ বিজিবি নির্বিচারে তাদের শান্তিপূর্ন মিছিলে গুলি করে নেতাকর্মীদের হতাহত করায় তারা বৃহস্পতিবার নোয়খালী জেলায় সকাল সন্ধ্যা হরতাল আহবান করেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সৌজন্যে কালের কণ্ঠ/ ০৭-০১-১৫