অবরোধ ॥ ক্ষতির মুখে ভোলাহাটের বরই চাষীরা

ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পরিবারের লোকের মুখে হাঁসি ফুটাতে কেউ নিজের কেউ বা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে বরই চাষে নেমে অপেক্ষায় দিন গুণছিলেন কখন ফল আসবে আর কখন বাজারে বিক্রয় করে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে নেয়া ঋণের টাকা শোধ করবেন। কিন্তু গাছে গাছে বরই থোকায় থোকায় ঝুলতে শুরু করলো ঠিক এমন মুর্হূতে শুরু হলো লাগাতর অবরোধ। অবরোধে সড়কে যান চলাচল ঝুকিপুর্ণ। পূড়ছে গাড়ি, পুড়ছে মানুষ, পুড়ছে চালক। অবরোধের এই তীরে এখন আক্রান্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজলার বরই চাষীরা। তাদের বরই এলাকার বাইরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাতের জন্য পরিবহন সমস্যায় জমিতেই বরই পড়ে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিক্রয়ের জন্য ঢাকা বা চট্রোগ্রামে দাম হাঁকা হচ্ছে কেজিতে মাত্র ৫ থেকে ১০টাকা দরে। বরই চাষী রহমতুল্লাহ জানান, তিনি খুব স্বপ্ন নিয়ে ১২ বিঘা বরই ফলসহ ক্রয় করেছিলেন এবং ৫ বিঘা নিজে তৈরী করে বরই চাষ করেন। তার বরই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাত করতে অবরোধের কারণে মালবাহি পরিবহন না পাওয়ায় এবং পেলেও অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হওয়ায় সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না ফলে জমিতেই বরই পঁচে ঝরে ঝরে পড়ছে। এ দিকে তিনি বলেন, ঢাকা ও চট্রোগ্রামের ব্যাপারীরা কেজি প্রতি বরই ৫/১০ টাকা মূলে ক্রয়ের কথা বলছেন। কিন্তু এ মূল্যে বরই বিক্রয় করলে পরিবহনর ভাড়াই শোধ করা হবে তাদের কোন লাভ থাকবে না। অপর দিকে আরেক বরই চাষী ভোলাহাট লোড-আনলোড কুলি সমিতির সভাপতি পলাশ বাবু একই কথা জানান। তবে তিনি বলেন, বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কাছ থেকে নেয়া ঋণের বোঝা কি ভাবে নামাবেন এমন হতাশায় এখন সবা বরই চাষীর মাঝে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, এবার ভোলাহাট উপজেলায় মোট ৬ শত ৬৭ একর জমিতে চাষ হয়েছে বরই এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ১৫ মে:ট:। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে আশাবাদ কৃষি বিভাগের। কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ জানান, দেশের চলমান অবরোধ সংকোটের কারণে পরিবহন সমস্যায় বরই চাষীদের প্রয়োজনীয় অর্থ আয় করা সম্ভব হয়ে উঠবে না। তবে প্রশাসনিকভাবে পরিবহন পাহারা দিয়ে বরই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরহের উদ্দ্যোগে কিছুটা হলেও আলো জলে উঠবে তাদের ঘরে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ গোলাম কবির, ভোলাহাট/ ২২-০১-১৫

,