মনিরুল হত্যাকান্ডে দ্বিতীয় দিনেও সোনামসজিদ বন্দরে অচলাবস্থা ॥ প্রভাবশালী ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

সোনামসজিদ স্থল বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ও যুবলীগ নেতা মনিরুল ইসলামকে এ্যাসোসিয়েশনের প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করে নেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের পেছনে রয়েছে শিবগঞ্জে প্রভাবশালী মহল। আগে থেকে হত্যার পরিকল্পনার নিয়েই দাওয়াত খাওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে গিয়ে মনিরুলকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহততে স্ত্রী রহিমা খাতুন।
বন্দর এলাকার শিয়ালমারা গ্রামের যুবক মনিরুল নিহত হওয়ার ঘটনায় রোববারও সোনামসজিদ স্থল বন্দরে অচলাবস্থা চলেছে। হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে বন্দরের শ্রমিকসহ এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছে। ফলে দু’দিন ধরে বন্ধ রয়েছে সোনামসজিদ স্থল বন্দরের আমদানী রপ্তানী কার্যক্রম। এলাকাবাসী ও শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ভারতের মহদিপুর বন্দর থেকে কোন পণ্যবাহি গাড়ি ঢুকতে পারছেনা। মহদিপুরে আটকা পড়েছে প্রায় ১২ শ পণ্যবাহি ট্রাক। এর মধ্যে কয়েক শ রয়েছে ফলসহ পচনশীল দ্রব্যের ট্রাক।
এদিকে, মনিরুলের হত্যাকান্ডের ঘটনায় শিয়ালমারা এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে বিরাজ করছে ক্ষোভ আর মনিরুলের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের লোকজনের আহজারিতে আকাশ ভারি হয়ে উটেছে।  মনিরুলের স্ত্রী রহিমা খাতুন ও বোন সাহানারা খাতুন মনিরুল হত্যাকান্ডকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড উল্লেখ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ ডটকমকে বলেন, ‘ ওরা (আখেরুল, সিরাজুল ও টুটুল) আগে থেকে পরিকল্পনা দাওয়াত খাওয়ার নাম করে মনিরুলকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে’। মনিরুলের স্ত্রী রহিমা বেগম জানান, শুক্রবার সকালে বাড়িতে থাকা অবস্থাতে আখেরুল ফোন করে ডাকেন তার স্বামীকে। বের হওয়ার সময় মনিরুল তাকে বলে যান, আখেরুলদের সঙ্গে একটি দাওয়ার খেতে যাবেন। ফিরতে রাত হয়ে যাবে। কিন্তু কোথায় কিসের দাওয়ার জিজ্ঞাসা করলে কিছুই বলতে পারেনি মনিরুল।
অন্যদিকে বন্দর সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব-নিকাশ নিয়ে কয়েকটি মিটিং হয়েছিল। এসব মিটিংই সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের গচ্ছিত টাকা আত্মসাতে বিষয়টি বেরিয়ে আসে। আর এ কারণেই মনিরুল কে হত্যা করা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএন্ডএফ এজেন্ট জানান, প্রচুর টাকার হিসেব নিকেশ। সেই কারণে হত্যার পিছনে শিবগঞ্জের বহু প্রভাবশালীরাও জড়িত রয়েছে।
মনিরুল হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার স্ত্রী রহিমা বেগম হত্যাকান্ডের পর আটক হওয়া তিনজনসহ মোট ১৩ জনের নামে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলার আসামী তালিকায় রয়েছেন প্রভাবশালীরা।