বর্তমান সরকার নারীর উন্নয়নে কাজ করছেন ----মহিলা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, দেশে মোট সংখ্যার অর্ধেক নারী। এই বিশাল জন সংখ্যার নারীদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আর তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নারী উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে । শেখ হাসিনার সরকারই নারীদের যোগ্য মর্যাদা দিয়ে সন্তানের পরিচয়ের ক্ষেত্রে  পিতার  নামের পাশাপাশি মায়ের নাম বাধ্যতামূলক করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নারীর কল্যাণে বিধবা ও বয়স্কভাতাসহ বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি চালু করেছেন। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে নারীদের ঘরে রাখলে চলবে না। বিশেষ করে দরিদ্র নারীদের পূরুষের পাশাপাশি কম্পিউটার, সেলাই শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে ভাগ্যের পরিবর্তনে এগিয়ে নিতে হবে। সেজন্য বর্তমান সরকার পিছিয়ে পড়া নারীদের স্ববলম্বী ও তাদের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্ন বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করে নারী পুরুষের ভেদাভেদ ভূলে একসাথে কাজ করার আহবান জানান তিনি । প্রতিমন্ত্রী  শনিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রানীহাটি ইউনিয়নের কৃষ্ণগোবিন্দপুর ডিগ্রী কলেজ প্রাঙ্গনে খাদ্য ও জীবিকা নিরাপত্তা (এফ এল এস) প্রকল্পের আওতায় ৫’শ ১৫জন  উপকারভোগীর মাঝে মাসিকভাতা বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে এ সব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক সরদার সরাফত আলীর সভাপতিত্বে  অনুষ্ঠিত  ভাতা বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সদর আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, বেগম আখতার জাহান এমপি, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আশরাফ হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার বশির আহম্মদ পিপিএম , এফএলএস প্রকল্প পরিচালক তাজুল ইসলাম প্রমুখ। প্রতিমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন,জমি দেয়া হলে তাঁর মন্ত্রণালয় থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিশু একাডেমীর ভবন ও শিশু পার্ক নির্মাণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে ৩’শ ২৩জন অতি দরিদ্র মহিলা ও ১’শ ৯২জন প্রান্তিক বর্গাচাষীর মধ্যে ১ হাজার ৪শ’ টাকা করে ভাতা বিতরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মোট উপকারভোগি অতি দরিদ্র মহিলার সংখ্যা ৩ হাজার ৪০০জন, প্রান্তিক বর্গাচাষী ২ হাজার ২০ জন মোট ৫ হাজার ৪৪০ জন। শিবগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের উপকারভোগি অতি দরিদ্র মহিলার সংখ্যা ৪ হাজার ৮০০ জন ও প্রান্তিক বর্গাচাষী ২ হাজার ৮৮০জন মোট ৭ হাজার ৬৮০। গোমস্তাপুর উপজেলার ৮টি ইউনিযনের অতি দরিদ্র উপকারভোগি মহিলা ২ হাজার ৪০০জন এবং প্রান্তিক বর্গাচাষী ১ হাজার ৪৪০জন মোট ৩ হাজার ৮৪০। নাচোল উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের অতি দরিদ্র উপকারভোগি মহিলা ১ হাজার ৩০০ জন এবং প্রান্তিক বর্গাচাষী ৭৮০জন মোট ২ হাজার ৮০জন। ভোলাহাট উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের অতি দরিদ্র উপকারভোগি মহিলা ৯০০ জন এবং প্রান্তিক বর্গাচাষী ৫৪০জন মোট ১ হাজার ৪৪০জন। জেলায় অতিদরিদ্র উপকারভোগি মহিলার সংখ্যা মোট  ১২ হাজার ৮০০জন ও প্রান্তিক বর্গাচাষী ৭ হাজার ৬৮০জন সর্বমোট ২০ হাজার ৪৮০জন।
২০ হাজার ৪৮০জন উপকারভোগি ২০ মাস ব্যাপি খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের জন্য ৪০০ টাকা হারে, ১২ হাজার ৮০০ অতিদরিদ্র মহিলাকে বসতবাড়িতে সব্জী চাষের জন্য ১ হাজার টাকা হারে এবং স্থায়িত্বশীল জীবিকা তথা আয় বৃদ্ধিমূলক কর্মকান্ড বহুমুখি করণের জন্য ১৪ হাজার ৫০০ টাকা,  ৭ হাজার ৬৮০ জন প্রান্তিক বর্গাচাষীর মাঝে শুষ্ক বরেন্দ্র এলাকায় কৃষি উৎপাদনের উপযোগি কৃষি উপকরণের জন্য  ৪ হাজার ১০০ টাকা হারে এবং জৈব সার প্রস্তুতকরণ, নার্সারী উন্নয়ন, পুষ্টিসমৃদ্ধ শস্য উৎপাদনসহ বিভিন্ন কাজের জন্য ৬ হাজার ৫০০ টাকা হারে প্রদান করা হয়েছে। সর্বমোট টাকা বিতরণ করা হয়েছে ৪২ কোটি ২৫ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ টাকা।