শীতের শুরুতেই লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে কারিগররা
শীতের শুরুতেই লেপ-তোষক তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের কারিগররা। তারা এখন সুঁই-সুতা- তুলার ও ধনুক নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীতের আগাম প্রস্তুতি নিতে এসব সামগ্রী বানাতে ক্রেতারাও ভিড় করছেন দোকানগুলোতে। অনেকেই আবারে কারিগরদের কাছে পুরোনো লেপ-তোষক মেরামত করাতে আসছেন।
সরজজমিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের নিউমার্কেট সংলগ্ন এলাকা, পুরাতন বাজার, শিবগঞ্জ বাজার ঘুরে দেখা যায়, লেপ-তোষকের দোকানগুলোয় লালকাপড়ে সুই দিয়ে সুতা বুননের কাজে কারিগরদের কর্ম ব্যস্ততা। দোকানিরাও পর্যায়ক্রমে অর্ডার নিচ্ছেন। আর সময়মতো এসব সামাগ্রী ক্রেতার কাছে হস্তান্তরের জন্য গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছেন তারা। পশ্চিমা শুষ্ক ও শিতল বাতাসে ঠান্ডা অনুভুত হওয়ায় শীত মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ পৌরএলাকার ছোটচক মহল্লার বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, কিছুদিন থেকে দিনের বেলায় বাতাস হলেও গুমোট গরম রয়েছে। একই সঙ্গে সন্ধ্যার পর থেকে শুরু করে ভোরপর্যন্ত শীত অনুভুত হচ্ছে। এ সময় মোটা কাপড় না পড়লে শীতজনিত রোগ হওয়ার উপক্রম দেখা দিচ্ছে। সেজন্য এবারে শীতের শুরুতেই লেপ বানাতে দিয়েছি। কিন্তু গতবার যারা লেপ বানিয়েছিল তাদের কথা শুনে যা বোঝলাম এবছর লেপ তৈরীতে খরচ কিছুটা বেড়েছে।
এবছর শীত বেশি হতে পারে এমন আশঙ্কায় মৌসুমের শুরুকে লেপ তৈরি করতে দিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আলিনগরের বাসিন্দা নেকবর আলী। তিনি জানান, সাধারণত নভেম্বরের শেষদিকে শীত অনুভূত হয় কিন্তু এবার মৌসুমের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। এখন থেকেই শীত অনুভুত হচ্ছে। তাই লেপ তৈরীর জন্য দোকানে গিয়ে কারিগরদের কাছে অর্ডার দিয়েছি। তারাও খুব কম সময়ের মধ্যে লেপ হস্তান্তর করবে বলে জানিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, গতবছরের তুলনায় এবারে শীত মৌসুমে লেপ ও তোষক তৈরীকে কিছুটা খরচ বেড়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, পাকিস্তান ও মিশর থেকে বাঙ্গা তুলা এবং চীন থেকে আমদানি হয় থাইবার তুলা। এছাড়া পোষাকপণ্য থেকে বানানো দেশীয় তুলার দামও বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে শ্রমিকের মজুরিও। যার কারণে এসব তৈরীর কাচামাল ও শ্রমিক মুজরি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার লেপ-তোষক তৈরির খরচও বেড়েছে।
তারা আরও জানান, বর্তমানে প্রতিকেজি শিমুল তুলা রমক ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকায়, পোশাকপণ্য থেকে তৈরী তুলা অর্থ্যাৎ কার্পাস তুলা বিক্রি হচ্ছে ১৪০- ১৮০ টাকা, কালোহুল তুলা ৩০-৪০ টাকা, সাদা তুলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৌরএলাকার লেপ-তোষকের কারিগর অহেদুর রহমান বাবু জানান, শীতের শুরুতেই ক্রেতাদের ভীড় বেড়েছে।গতবারের তুলনায় এবছর ক্রেতা তুলনামূলক বেশি। এখন আকার অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরিতে ১৫০০-১৬০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হচ্ছে। যা গত শীত মৌসুমের চেয়ে ২০০ টাকা বেশি। একটি লেপ তৈরি করতে মজুরি ২০০-৩০০ টাকা, বালিশ প্রতিটি ৫০ টাকা, তোষক ও জাজিম তৈরিতে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা মজুরি নেয়া হচ্ছে। এই মজুরির হার অন্য সময়ের তুলনায় কিছুটা বেশি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ / নিজস্ব প্রতিবেদক / ১০ নভেম্বর ২০২৫

