চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৯টি হাটে ছোট গরুর চাহিদা বেশি


ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে উত্তরের সীমান্ত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ বছরে ১২ হাজার ১৫৯ টি খামারে বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৯০টি গবাদি পশু লালন পালন হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে অনেক নতুন উদ্যোক্তাও। এ সব নতুন উদ্যোক্তা ও খামারীরা তিনটি প্রধান গবাদি পশুর হাট বটতলা হাট, তর্তিপুর হাট ও সোনাইচণ্ডি হাটে গবাদি পশু নিয়ে গিয়ে বেচা-কিনা করছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাটগুলোয় শেষ মুর্হুতে ব্যাপক সংখ্যক গরু আমদানী হলেও ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দামের সমন্বয় হচ্ছেনা বা দামে দরে মিলছেনা। বিক্রেতারা বলছে, বেশি খরচে গরু পালন করে কাংখিত দাম পাচ্ছেনা। আর ক্রেতা বলছেন, আকার ভেদে এবার গরুর দাম গতবারের চেয়ে বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ফলে কোরবানীর পশু কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছোট বড় মিলিয়ে ১৯টি গবাদি পশু হাটে এবার ব্যাপক হারে নামছে দেশীয় গরু। জেলার তিনটি প্রধান গবাদি পশুর হাট বটতলা হাট, তর্তিপুর হাট ও সোনাইচণ্ডি হাটে গরু আমদানী জমজমাট রূপ লাভ করেছে। হাটবারগুলোয় মাঝারি ও ছোট সাইজের গবাদিপশু ও মানুষের ভিড়ে পা ফেলার যায়গা থাকছেনা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসছেন ব্যাপারিরাও। এতো গরু সেই সঙ্গে এতো মানুষ... তবুও বেচা-কেনা নিয়ে মুখে হাসি নেই ক্রেতা বিক্রেতা দু’ পক্ষেই।
একদিকে, গরু খামারী ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, গো খ্যাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে বেশি খরচে গরু পালন করে কাংখিত দাম পাচ্ছেন না তারা। অন্যদিকে ঈদুল আজহায় পশু কোরবানী দেয়ার আশায় গরু কিনতে যাওয়া ক্রেতারা বলছেন... ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে গরুর দাম তত বাড়ছে। গতবারের চেয়ে এবার গরুর আকার ভেদে দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে। কোরবানী দেয়ার মতো ছোট সাইজের গরুর দাম ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। আর একটু ভাল চিন্তা করলেই যেতে হচ্ছে লাখের উপরে। ফলে গরু কিনতে গিয়ে বাজেট মিলাতে পারছেন না ক্রেতারা। তবে ছাগলের দাম রয়েছে সহনীয় মাত্রায়-



চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রাণী সম্পদের তথ্য মতে, এবার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৯টি গবাদিপশু। এর বিপরীতে জেলার ৫ উপজেলায় ছোট-বড় ও মিলিয়ে ১২ হাজার ১২৯ টি খামারে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৯০ টি গবাদিপশু ও ছাগল লালন-পালন করে কোরবানির জন্য প্র¯‘ত করা হয়েছে। ফলে জেলায় এবার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে ৫০ হাজার ৩১১টি।
কোরাবানীর ঈদ মানেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসার হিড়িক। এক সময় এমন চিত্র থাকলেও এখন তা নেই... এটিকে সোনায় সোহাগা উল্লেখ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জেই উৎপাদিত হয়েছে প্রচুর পরিমাণ গবাদি পশু। কোরবানীর জন্য গবাদি পশু প্রস্তুত আছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৯০টি। যা চাহিদার চেয়ে ৫০ হাজারেরও বেশি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে কোরবানী যোগ্য এসব পশু  বাহিরের জেলা বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে খামারিরা। এবার হাটগুলো দাম ভাল থাকায় ব্যবসায়ীরা কিছু স্বস্তির মধ্যে থাকবেন।
তিনি আরো বলেন, এ জেলায় খামারিদের  পাশাপাশি প্রতিটি মানুষের বাড়িতেও ৪-৫টি করে পশু লালন-পালন করে থাকে। তবে বাড়ির পশুগুলো গণনার বাইরে থাকে।
গবাদি পশু পালনে খরচ বৃদ্ধির মুখে পড়া বাণিজ্যিক খামারিরা আশা করছেন... ঈদের কেনা বেচার শেষ মুর্হুতে ক্রেতাদের সঙ্গে দামের সমন্বয়ে হয়তো লাভের মুখ দেখবেন তারা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২৭ জুন, ২০২৩