চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা> গাড়ি না দেয়ার অভিযোগে চেয়ারম্যানের ড্রাইভারকে পেটালেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের লোকজন


চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ড্রাইভারকে পিটিয়ে আহত করার পর চাবি ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে মহিলা ভাইস  চেয়ারম্যান নাসরিন আখতারে বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন আখতারের উপস্থিতিতে তার জামাই ও অনুসারীরা এঘটনা ঘটায়।
উপজেলা পরিষদের সূত্র জানায়, পরিষদের বিভিন্ন কার্যক্রম অবগত না করা, কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে না দেয়াসহ গাড়ি ব্যবহার করতে না পারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিলো উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি তসিকুল ইসলাম তসি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা আওয়ামীলীগের নেত্রী নাসরিন আখতারের মধ্যে।
ওই সূত্র জানায়, দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের জের ধরে গাড়ির চালক আমীর হোসেনকে মারধরের ঘটনা ঘটলো।
চেয়ারম্যানের গাড়ি চালক আমির হোসেন বলেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফোন দিয়ে আমাকে ডাক দিলে আমি তার রুমে যায়। সেখানে গেলে তিনি আমার কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে নেয়ার পর তার জামাইকে দিয়ে দেন। তার জামাই চাবি নিয়ে মোটরসাইকেলে চলে যায়। তার (মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান) কাছে অনেক অনুনয় বিনয় করলেও চাবি না দিয়ে জামাইকে পুনরায় ডাক দেয়। এরপর উপজেলা পরিষদ চত্বরেই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের জামাইসহ ২টি মোটরসাইকেলে ৬ জন এসে বেধড়ক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়।
এব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মারধরের সময় আমি অফিসেই ছিলাম। হঠাৎ শুনতে পেলাম আমার ড্রাইভারকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের জামাই জাহিদ ও তার লোকজন বেধড়ক পিটিয়েছে। এমনকি মারধরের পর গাড়ির চাবিও ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। পরে ড্রাইভারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে। পূর্বের কোন জের ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'হঠাৎ করেই এমন আক্রমণ হয়েছে, আগের কোন ঝামেলা ছিল না।'
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার সুলতানুল আরেফিন জানান, উপজেলা থেকে একজনকে মাথায় ও শরীরে আঘাত নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে আহত ব্যক্তিকে মাথায় ব্যান্ডেজসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন আখতার বলেন, 'ইউএনও মহোদয়ের সাথে সরকারি একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য গাড়ি ব্যবহার করতে চাইলে ড্রাইভার রাজি হয়নি৷ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে বললেও তিনি চাবি দিতে নারাজ। তাই চাবি কেড়ে নিয়েছি।' তবে মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইফফাত জাহান বলেন, 'ঘটনার সময় উপজেলার বাইরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শনে ছিলাম৷ পরে বিষয়টি জানতে পেরেছি। খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।'


চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২৬ জুলাই, ২০২১