প্রতিবদ্ধি তরুণীর ফোন পেয়ে খাদ্য নিয়ে ছুটে গেলেন শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান


করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ ও মানুষকে করোনার ছোবল থেকে বাঁচাতে সরকারের ঘোষণা করা কঠোর বিধিনিষেধ কর্মসুচিতে খেটে খাওয়া মানুষগুলো বেকায়দায় পড়েছেন। যাঁরা শ্রম দিয়ে নিজের পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করতেন সেই সব মানুষদের মধ্যে অনেকেই এখন করোনার কারণে খাদ্য সাহায্য নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এমন সব খেটে খাওয়া অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন চাঁপাইনাববগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
করোনা পরিস্থিতিতে এমনই বেকায়দায় পড়া একজন প্রতিবন্ধি তরুণী। বাড়ি তার চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নে। মা-বাবা মারা যাওয়ায় দুই বোনকে নিয়ে কষ্টের সংসার। এরই মাঝে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই অভাবের সংসারে খাবার যোগাতে পড়তে হয় তাঁকে কষ্টের মাঝে। খুধার কারণে লজ্জাকে পেছনে ফেলে বুধবার মধ্যরাতে ফোন দেন শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের নম্বরে। এরপরই মানবিকতার প্রকাশ ঘটান উপজেলা চেয়ারম্যান।  সকালেই সে অসহায় তরুণীর বাসায় চাল, ডাল, সয়াবিন, লবণসহ ব্যাগভর্তি খাবার নিয়ে হাজির হলেন উপজেলা চেয়ারম্যান। শুধু এই তরুণী নন, এক মাস ধরে কষ্টে থাকা প্রতিবন্ধী, রিকশাচালক, শ্রমিক, গৃহপরিচারিকা, হরিজনসহ ক্ষুদ্র আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। অচেনা কারও ফোন পেয়ে খাবারভর্তি ব্যাগ নিয়ে বাড়িতে হাজির হয়েছেন, অনাহারে থাকার খবর পেয়ে কারও বাড়িতে ছুটে গেছেন। বুধবার সকাল থেকেই শিবগঞ্জের আকাশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। শিবগঞ্জের চরাঞ্চলের বাসিন্দা রূপালী বেগম। ঘরে খাবার নেই। তার স্বামী শরিফ মিয়া রিকশাচালক। এক মাস ধরে রিকশার চাকা ঘোরেনা। রূপালী নিজেও শহরের বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতেন। সেই কাজও বন্ধ। দিশেহারা রূপালীকে এক ব্যক্তি উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলামের ফোন নম্বর দেন। সেই নম্বরে ফোন দেওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে রূপালীর অসহায় পরিবারের জন্য খাবারভর্তি ব্যাগ নিয়ে তার বাড়িতে হাজির হন উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম। এসময় সেখানের আরও ৭০টি পরিবারকে খাদ্যসহায়তার প্যাকেট উপহার দেন। উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিদিনই কেউ না কেউ ফোন দিয়ে কষ্টের কথা বলেন। সাধ্যমতো তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। এ পর্যন্ত ফোন পেয়ে সহ¯্রাধিক অসহায় পরিবারকে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, গত একমাসে আমি আমাদের পারিবারিক সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘জিকে ফাউন্ডেশন’ এর অর্থায়নে শিবগঞ্জে প্রায় ছয় লক্ষ মাস্ক বিতরন করেছি। এছাড়াও গত বছরে করোনাকালীর সময়ে প্রায় বিশ হাজার পরিবারকে খাদ্য সামগ্রি সহ নগদ অর্থিক সহায়তা দিয়েছি।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ৮ জুলাই, ২০২১