চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৭ দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের খবরে মানুষের মাঝে আত্মংক

উত্তরের সীমান্ত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার শংকায় যে বিশেষ লকডাউনের ঘোষণা তা সত্যি হলো। জেলাজুড়ে উদ্বেগজনকহারে করোনা সংক্রমণ ও ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার শংকায় ঘোষণা করা বিশেষ লকডাউনের চতুর্থ দিনের মাথায় গণমাধ্যম খবর দিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের করোনা আক্রান্ত ৭ জনের দেহে ধরা পড়েছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। শুক্রবার রাতের গণমাধ্যমের এই খবরে শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জজুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। শনাক্ত ৭ জনের মধ্যে ৫ জনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় ও দু’ জনের বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়িগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
শনিবার লকডাউনের পঞ্চম দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর ও শহরতলীতে আগের লকডাউনের দিনের তুলনায় অনেক কম মানুষকে দেখা গেছে। প্রধান প্রধান মার্কেটগুলো বন্ধ থাকলেও খোলা ছিল কাঁচাবাজার। কিছু মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনাকাটার জন্য বের হয়েছিলেন। আন্ত জেলা ও আন্ত উপজেলা রুটে যান চলাচল করছেনা। তবে, শহরে কিছু রিক্সা ও অটোরিক্সা চলাচল করেছে।
শহরজুড়ে মানুষের উপস্থিতি তুলনামূলক কম হওয়ার কারণ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে, ৭ জনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ার খবর। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের খবরে সাধারণ মানুষের মাঝেও আতংক দেখা দিয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান ড. মাযহারুল ইসলাম তরু বলেন, ‘ গতরাতে সংবাদমাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৭ জনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের খবর দেখার পর আমার ভেতরে অস্থিরতা কাজ করছে। আমরা ভারতের যে ভয়বহ অবস্থা দেখছি তাতে আমাদের দ্রুত সতর্ক হতে হবে। না করুণ অবস্থার দিকে যেতে হবে’।  
এ ব্যাপাওে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘৭ জনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের যে সংবাদ গণমাধ্যমে এসেছে তা অফিসিয়ালী প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমাদের কাছে আসেনি। তবে, শনিবার স্বাস্থ্য বিভাগের উর্দ্ধোতন কর্মকর্তার কাছ থেকে আমি ৭ জনের দেহে ভারতীয় ধরণ ধরা পড়ার বিষয়টি জেনেছি। এরপর আমরা ওই ৭ জনের পুনোরায় করোনা পরীক্ষার এবং তাদের আত্মীয়স্বজনসহ তাদের সংষ্পর্শে যারা এসেছেন তাদের চিহ্নিত করে করোনা পরীক্ষার উদ্যোগ নিচ্ছি’। তিনি বলেন, ‘ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের অনেক ধরণ রয়েছে। তারা কোন ধরণে আক্রান্ত এবং তাদের শারীরিক অবস্থা কি তা আমি বলতে পারবো না। বিশেষজ্ঞ যারা তারাই বলতে পারবেন’।  
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৪ জন মারা গেছেন। সিভিল সার্জন জানান, মারা যাওয়াদের মধ্যে ১ জন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, দু’ জন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ও একজন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাবার পথে মারা যান। এনিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩২ জনে।
অন্যদিকে, চলমান লকডাউন বাড়বে কিনা এ প্রসঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ সাংবাদিকদের জানান, করোনা সংক্রমণের উর্ধোগতির মুখে আমরা যে বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে তাতে মানুষ সাড়া দিয়েছে। প্রশাসনও কঠোন অবস্থানে থেকে লকডাউন বাস্তবায়ন করছে। সীমান্ত এলাকাতে বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসন কড়াকড়ি আরোপ করেছে। লকডাউনের সুফল কিছুটা পাওয়া যাচ্ছে। তবে, লকডাউন বাড়বে কিনা তা নির্ভর করছে পরিস্থিতির উপর। পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলে লকডাউন তুলে নেয়া হবে।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদ/ ২৯ মে, ২০২১