নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত তিনজনের বাবার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে

 নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের তিনজনের বাবার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। তারা হলেন-চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের বেগুনবাড়ি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে নজরুল ইসলাম (৬৫) ও নজরুল ইসলামের স্ত্রী আক্তারা বেগম (৬০)। আক্তারা বেগমের বাবার বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের মাস্টার পাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মৃত তোজাম্মেল হক। দীর্ঘদিন থেকে তাঁরা রাজশাহীর উপশহরে বসবাস করতেন। অন্যদিকে নিহত অপর দম্পতি অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব হাসান ইমাম (৬৩) ও হুরুন নাহার বিলকিস বানু (৬০) দীর্ঘদিন থেকে রাজশাহীতে বসবাস করতেন। হাসান ইমাম সর্বশেষ ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ছিলেন। এর আগে তিনি শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক ছিলেন। তিন বছর আগে তিনি অবসরে যান। তাঁর গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে এবং হুরুন নাহার বিলকিস বানু চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামোশংকরবাটী চৌকা গ্রামের  আব্দুর রাকিবের মেয়ে। তিনি নাটোরের গোপালপুর কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হিসাবে অবসরে যান। তাঁদের দুই ছেলে ক্যানাডা প্রবাসী। বড় ছেলে কায়সার ইমাম সেখানে চাকরি করেন। ছোট ছেলে তৌকির ইমাম সম্প্রতি এমএস শেষ করে পড়ালেখার পাট চুকিয়েছেন।বিলকিস বানুর ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আব্দুর রাজ্জাক জানান, দুর্ঘটনার পর তার আরেক বড় বোনের ছেলে মাসুম সালাউদ্দীন ও তার দুলাভাইয়ের এক স্বজন নেপাল গেছেন। তিনি জানান, দুইজনই চাকুরী থেকে অবসরে যাওয়ার পর রাজশাহীর শিরোইল এলাকায় ভাড়াবাসায় গত ২ বছর থেকে থাকতেন। তিনি আরো জানান, নিহত নজরুল ইসলাম ও আক্তারা বেগম দম্পতির সাথে তার বোন দুলাভাইয়ের পরিবারের সখ্যতা ছিল, তারা চার জনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। আর এ সখ্যতা থেকেই তারা এক সাথেই  নেপাল যাচ্ছিলেন।
দাফনের বিষয়ে তিনি জানান, যেহেতু আমরা আত্মীয় স্বজনরা রাজশাহীতে অনেকেই থাকি সেহেতু, রাজশাহীতেই দাফনের সিদ্ধান্ত হতে পারে। এখুনি চুড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি, ঢাকাতেও দাফন হতে পারে। এদিকে নিহত নজরুল ইসলামের ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম ও রেজাউল করিম জানান, তাদের ভাই ও ভাবি নেপালে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। তাঁরা জানান তাদের ভাই নজরুল ইসলাম ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, তিনি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, রাজশাহীর আঞ্চলিক শাখার ব্যবস্থাপক ও ভাবি ছিলেন রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের শারীরিক শিক্ষক। দুইজনেই অবসর জীবনযাপন করছিলেন। প্রথম বারের মতো তাঁরা দুজনে বিদেশে বেড়াতে যাচ্ছিলেন।
তাঁরা আরো জানান, নজরুল ইসলামের দুই মেয়ে, বড় মেয়ে সানজিদা আক্তার কাকনের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে কনক ঢাকায় বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে শেষ বর্ষের ছাত্রী। তাঁরা দুইজনই ঢাকায় থাকেন।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নজরুল ইসলামের শ্যালক মইনুদ্দীন চিশতী নেপাল গিয়েছেন। নজরুল ইসলাম দম্পতির দাফন গ্রামের বাড়ি গোমস্তাপুরের বাঙ্গাবাড়ি ইউপির বেগুনবাড়ি গ্রামে, নজরুল ইসলামের পিতা আব্দুর রহিমের কবরের পাশে দাফন হবে বলে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার ভাইয়েরা।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৩-০৩-১৮