শিবগঞ্জে ১টি মোবাইল ফোনের জন্য বন্ধুকে হত্যা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌর এলাকার তক্তিপুর মহাশ্মাশান ঘাট এলাকায় গত ৯ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান টকিন (২৫) নামে এক রং মিস্ত্রি’র লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় এক জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামি শিবগঞ্জ পৌর এলাকার নতুন আলীডাঙ্গার ফারুক আহমেদের ছেলে ও ৮ম শ্রেণির ছাত্র মুকিমুল ইসলাম মুকিম (১৬)। পরে আসামী মুকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিম শহিদুল ইসলামের আদালতে প্রদত্ত জবানবন্দীতে নিহত টকিনের ব্যবহৃত দশ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ফোনসেটের জন্য সে ও তার আরেক বন্ধু নাসিম (২৫) দুই জন মিলে টকিনকে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে শ্মাশান ঘাট এলাকায় পিটিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখে বলে জানায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম বিকেলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এ ব্যাপারে এক প্রেস ব্রিফিং করেন। এ সময় তিনি বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার পর তক্তিপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন টকিন। পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে তাঁর লাশ নির্জন শ্মশান এলাকায় পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। কিন্তু প্রাথমিক তদন্ত ও আলামতেই পুলিশ টকিনকে হত্যা করা হয়েছে এই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়। ওই রাতেই টকিনের পিতা মানিরুল ইসলাম অজ্ঞাতানামা ব্যক্তিদের আসামী করে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) জাহাঙ্গির আলম মামলার তদন্ত শুরু করেন। পরে সূত্রবিহীন (কু-লেস) মামলা হিসেবে এটি গোয়েন্দা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল্লাহ জাহিদ মামলার তদন্ত শুরু করেই নিহত টকিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের খোঁজ করেন। মোবাইলটি লাশের সাথে পাওয়া না যাওয়ায় এর কললিস্ট ও ট্রাকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ১২ সেপ্টেম্বর শিবগঞ্জের রানীহাটী বাজারের একটি দোকান থেকে এটি উদ্ধার করা হয়। স্যামসাং কোম্পনীর মোবাইলটি হত্যাকারীরা মাত্র ১৮০০ টাকায় ওই দোকনে বিক্রি করে। এই সুত্রে পরদিন ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে মুকিমকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পলাতক রয়েছে অপর আসামী একই এলাকার সেসেরুল ইসলামের ছেলে কাঠমিস্ত্রি নাসিম।
প্রেস ব্রিফিং কালে উপস্থিত নিহত টকিনের পিতা ও মামলার বাদী তক্তিপুর গ্রামের মানিরুল ইসলাম এই হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তিনি জানান, নিহত মুকিমের তিন বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ জাহিদ জানান, অপর আসামী নাসিমকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৫-০৯-১৭

,