হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যাগাজিনে উস্কানীমূলক প্রবন্ধ লেখায় জেলা প্রশাসককে প্রতিবাদলিপি

হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ম্যাগাজিন “মঞ্জুরী”তে সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক প্রবন্ধ লেখায় লেখাটির প্রতিবাদ এবং লেখকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে প্রতিবাদলিপি জমা দিয়েছেন জেলার বিশিষ্ট জনেরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসানের হাতে প্রতিবাদলিপিটি জমা দেয়া হয়। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ম্যাগাজিন “মঞ্জুরী”তে “বাংলা নববর্ষের ইতিহাস, উদযাপন-রীতি ও আমাদের সংস্কৃতি” নামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধটিতে বাঙালি সংস্কৃতিকে কটাক্ষ করে ভূল তথ্য উপস্থাপন করে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে বলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশিষ্ঠজনরা। আর প্রবন্ধটি ভূল তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে বিভ্রান্তের মধ্যে পড়ছে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি রাষ্ট্রের অসাম্প্রদায়িক নীতির পরিপন্থি লেখা নতুন প্রজম্মকে বিপদগামী করবে বলে মনে করেন বিশিষ্ঠজনরা। তাই ‘মঞ্জুরী’তে এসব বিভ্রান্তিকর প্রবন্ধ ছাপানোর জন্য প্রবন্ধটির ম্যাগাজিনের সম্পাদক হরিমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বাদরুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসানের হাতে প্রতিবাদলিপি দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব সিরাজুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তৌফিকুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজ সেবক জেলা নাটাবের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মনোয়ার খান চান্না, জেলা নাটাবের সভাপতি মনিম উদ দৌলা চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহীম, এ্যাড. আফসার আলী, এ্যাড. সাইফুল ইসলাম রেজা, নয়মুল বারী, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হুদা অলক, জাসদ নেতা মনিরুজ্জামান মনির, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফাইজার রহমান কনকসহ অন্যরা। স্থানীয় ৩৫ জন বিশিষ্ট জনের স্বাক্ষরিত প্রতিবাদলিপি জমা দেয়া হয়।
এ সময় জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান জানান, এঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দ্রুতই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, প্রবন্ধের বিভিন্ন উস্কানিমূলক লেখার মধ্যে লেখা হয় “বাংলা নববর্ষের নামে বর্তমানে যেসব অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করা হয়, বাঙালি মুসলমানদের আবহমান সংস্কৃতি ও জীবনাচারের সঙ্গে তার কোন মিল নেই। বরং বাংলা নববর্ষের নামে এক শ্রেণীর বৃদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিসেবী যা কিছু করছেন, তা মূলত হিন্দু সংস্কৃতিরই প্রতিরূপ। ‘বাঙালি সংস্কৃতি’র নামে তা চালাবার ও একে সর্বজনীন বাঙালির সংস্কৃতি বলে দাবি করা হলেও ৯০% বাঙালি কথা বাংলাদেশী মুসলমানের ঈমান-আকিদা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সঙ্গে তা সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এটা আমাদের জন্য বিজাতীয় অপসংস্কৃতি”।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২১-০৪-১৭