সাবেক এমপি হারুনের বাড়িতে কবুতর চুরির অভিযোগে ৭ ঘন্টা রশি বাঁধা ছিল এক শিশু

বাথানবাড়িতে কবুতর চুরির অভিযোগে বিএনপি’র যুগ্ন মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের পাঠানপাড়াস্থ বাড়িতে আব্দুল আলিম নামের এক ১৩ বছরের শিশুকে দীর্ঘ ৭ ঘন্টা রশি দিয়ে বেঁধে রাখার ঘটনা ঘটেছে। বেঁধে রাখা শিশু আলিমের বাড়ি চাঁপাইনাববগঞ্জ পৌর এলাকার বিদিরপুর মিল্কী গ্রামে। তার পিতার নাম আব্দুল খালেক ওরফে মজিবুর। দুপুর ১টা থেকে তার বাড়ির নিচের বারান্দার গ্রীলে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা শিশুটিকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে খুলে দেয়া হয়। রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে।
কবুতর চুরির অভিযোগে সাবেক এমপি হারুনের বাড়িতে এক শিশুকে বেঁধে রাখা হয়েছে এমন খবরের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সাংবাদিকরা তার পাঠানপাড়াস্থ বাড়িতে গেলে বাড়ির নিচতলার বারান্দার গ্রীলের সঙ্গে শিশু আলীমকে বাঁধা অবস্থা দেখতে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে সাবেক এমপি হারুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওই শিশুটিসহ ৩ জন আমার সদর উপজেলার আতাহার বাথানবাড়িতে কবুতর চুরি করতে গেলে সেখানে থাকা লোকজন তাদের ধাওয়া করে আলীমকে ধরে ফেলে। অন্যরা সাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়’। তিনি বলেন, ‘ বাথানবাড়ির লোকজন শিশুটিকে আমার পাঠানপাড়ার বাড়িতে নিয়ে আসলে আমি তাদেরকে থানায় পাঠিয়ে দেই এবং থানার ওসিকে শিশুটিকে গ্রহণ করে তার যথাযথ অভিভাবকের কাছে হস্তান্তরের অনুরোধ করি। কিন্তু থানা শিশুটি না নিতে তাকে আবারও বাড়িতে নিয়ে আসা হয়’।
বাড়িতে গ্রীলের সঙ্গে বেঁধে রাখা কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন,‘ থানা শিশুটিকে গ্রহণ না করার পর পরই বিষয়টি আমি এসপি সাহেবকে অবহিত করি। আমার বাড়িতে কোন লোকজন ছিলনা। তাই সে পালিয়ে গিয়ে যদি আবার অন্য কোন অঘটন ঘটে সেই কারণে বেঁধে রাখা’।
রশি বাঁধা অবস্থায় শিশু আলিম বলে, ‘ বেলা ১১টার দিকে হারুন এমপি’র বাথান বাড়ি থেকে আমাকে ধরে আনে। তারপর থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে এসে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে। তখন থেকেই একঠাই দাঁড়িয়ে আছি’। অবশ্য আলীম স্বীকার করে বলে, ‘ ৯০ টাকার দেনা পরিশোধ করার জন্য ওখানে কবুতর ধরতে গেছিলাম। লাঠি দিয়ে কবুতর ধরার চেষ্ট করেছিলাম কিন্তু ধরতে পারিনি’।
এ ব্যাপারে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ হারুন সাহেবের লোকজন শিশুটিকে থানায় নিয়ে আসলে তাদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ চাওয়া হয়। কিন্তু তারা লিখিত অভিযোগ না দেয়ায় শিশুটি গ্রহণ করা হয়নি। থানায় আসা লোকজন শিশুটির অভিভাবকের কাছে তাকে (শিশুটিকে) ফিরে দিবেন বলে থানা থেকে নিয়ে চলে যান’।
তিনি জানান, দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশুটিকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখার ঘটনার খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুটি উদ্ধার করে। শিশুটির অভিভাবক হিসেবে তার মাকে পাওয়া গেছে। আলিম পুলিশী হেফাজতে রয়েছে। মঙ্গলবার আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৩-০৩-১৭