চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র ও জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমার্পন করলে আদালতের বিচারক নজরুল ইসলামের জামিন না-মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন। এদিকে, কাউন্সিলর হিসেবে শপথ গ্রহণের দিন নির্ধারণের মাত্র একদিন আগেই পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন নবনির্বাচিত সংরক্ষিত আসনের দু’ কাউন্সিলর।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর মাহবুবুল আলম জানান, সকালে নবনির্বাচিত মেয়র নজরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে বিচারাধীন হত্যা, নাশকতা, পুলিশের উপর হামলা, রাষ্ট্রীয় কাজে বাধাসহ ৭টি মামলায় জামিন লাভের জন্য আদালতে আত্মসমার্পণ করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এনামুল বারী’র আদালতসহ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ‘ক’ ‘ঘ’ ও ‘খ’ অঞ্চল আদালতে পৃথক পৃথকভাবে তিনি আত্মসর্মাপন করেন। এর মধ্যে আদালত দুটি মামলার জামিন মঞ্জুর করলেও ৫টি মামলার জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ প্রদান করে।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার রেহায়চরের আরিফুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামী হিসেবে পুলিশ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল অধিকারী’র আদালতে নজরুল ইসলামের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত ২১ জানুয়ারি রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করে।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, সকাল সকাল জামায়াত নেতা নজরুল ইসলাম আদালত এলাকায় ঢুকে পড়েন। আগে থেকে প্রস্তুত থাকা প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন আইনজীবি নিয়ে তিনি ঢুকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এজলাসে। ওই সূত্র জানায়, তিনি আগে থেকেই আদালতে থাকলেও বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয় সাড়ে ১২টার দিকে। এরপর তিনি একে একে অন্য আদালতগুলোতে গিয়ে বিচারিক কার্যক্রমের মুখোমুখি হন।
আদালতে জেলা জামায়াতের আমীর ও নবনির্বাচিত মেয়র নজরুল ইসলামের পক্ষে আইনগত সহায়তা প্রদান করেন এ্যাড. সাদরুল আমীন, ইসাহাক আলীসহ প্রায় ২০ জন আইনজীবি। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি জোবদুল হক।
নজরুল ইসলামের আদালতে আত্মসমার্পণকে ঘিরে সকাল থেকেই কোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তার আত্মসমার্পণের খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতারও ভিড় বাড়ে আদালত পাড়ায়।
অন্যদিকে, শপথ গ্রহনের একদিন আগে পুলিশ আটক করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর মোসলেমা বেগম মুসি ও শাকেরা খাতুনকে আটক করেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সদর থানা পুলিশ তাদের আটক করে। বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিভাগীয় শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার হেলালউদ্দীনের কাছে তাদের শপথ নেয়ার কথা ছিল।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাযহারুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের বিশেষ অভিযানে পূর্বের নাশকতার মামলার আসামী হিসেবে এবং সরকার বিরোধী প্রচারণার অভিযোগে তাদের স্ব স্ব বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে সোপার্দ করা হয়েছে’।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৩-০১-১৬