জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে শিবগঞ্জের পাঁকার চরে ‘চর লাইব্রেরী’

পদ্মার ভাংগন কবলিত এলাকার পাকা ইউনিয়নের একমাত্র পাঠাগারের ‘চর লাইব্রেরী’ র মাধ্যামে জ্ঞানের আলো অর্জন করছে সবশ্রেণীর মানুষ। কয়েকটি গ্রামের  বিভিন্ন পেশার মানুষ ও  ছাত্র-ছাত্রীরাও আসছে এ লাইব্রেরীতে বিনা খরচায় বই পড়তে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় পদ্মার ভাঙ্গন কবলিত ৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। যেগুলো অত্যান্ত  অবহেলিত। অবহেলিত এসব এলাকায় নেই কোন স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও চিকিৎসা সেবা। ভাঙ্গনকবলিত এসব এলাকাবাসীর একমাত্র অবলম্বন পায়ে হেঁটে বা বাইসাইকেলে অথবা নৌকায় করে উপজেলা সদরে আসা। এসব ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলো থেকে উপজেলা সদরে কোন সেবা নিয়ে বা প্রয়োজনীয় কাজ সেরে বাড়ি ফিরতে সারা দিন চলে যায়। তবে সব চাইতে ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়নটি হচ্ছে শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের প্রায় ৭০ ভাগই নদী ভাঙ্গনের কারনে অধিকাংশ স্থাপনাই পদ্মার পেটে।ভাঙ্গনের পর পদ্মার পেট থেকে জেগে ওঠা চরে আবারো ঠাঁই হয়েছে ভাঙ্গনের শিকার সর্বস্ব হারানো পরিবারগুলোর।এমন কি ইউনিয়ন পরিষদটি ভাঙ্গনের কবলে পড়ে বর্তমানে শিবগঞ্জ পৌর এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে তার কার্যক্রম পরিচালনা করায় এর সুফল থেকে বঙ্চিত হচ্ছে চরবাসী। তবে আশার কথা হলো বেসরকারী উদ্দ্যোগে চরে উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে সম্প্রতি। পশুপালন ,স্বল্প সুদে রীন,স্বাবলম্বী হবার জন্য বিভিন্ন উপকরন প্রদান, স্বাস্থ্য সেবা,সোলার প্যানেল বিতরন প্রভৃতি। সেসাথে একটি মোবাইল ফোন কোম্পানী এখানে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক স্থাপন করায়  এলাকাবাসী সীমিত আকারে হলেও এর সুফল পাচ্ছে । আর সম্প্রতি অবহেলিত ভাঙ্গনকবলিত ৩ টি ইউনিয়নের মধ্যে শুধু একটি ইউনিয়ন পাঁকার ১০ রশিয়া গ্রামে গড়ে ওঠেছে সকল শ্রেনী পেশার মানুষের জ্ঞান অর্জনের জন্য  বেসরকারী সংস্থা জিবাস নদী ও জীবনের সহায়তায় নির্মিত হয়েছে একটি চর লাইব্রেরী। বাংলাদেশ ব্যাংকের সি এস আর ফান্ডের আর্থিক সহায়তায় ও বেসরকারী সংস্থা জিবাস নদী ও জীবনের  প্রচেষ্টায় এ এলাকায়  একমাত্র একটি চর পাঠাগার ১০ কাঠা জমির উপর চালু করা হয়েছে। যেখানে দিনে সূর্য়ের আলোয় এবং রাতে সোলার প্যানেলের আলোতে চরবাসী শিক্ষার আলো পাবে। তবে চরবাসীর প্রত্যাশা বেড়ে যাওয়ায় তাদের দাবী এ পাঠাগারে যেন পর্যাপ্ত বই থাকে । থাকে তথ্য কেন্দ্রও। সেসাথে ডাচ বাংলা ব্যাংকের অর্থায়নে চরবাসীর জ্ঞান অর্জনের জন্য জীবাসের উদ্দ্যোগে চরের প্রায় সাড়ে ৩শ পরিবারকে দেয়া হয়েছে একটি করে সোলার ল্যাম্প।
অন্যদিকে জিবাসের পরিচালক এবং নদী ও জীবন প্রকল্পটির কর্নধার তরিকুল ইসলাম টুকু শোনালেন আশার বানী। তিনি এ প্রতিবেদক কে জানান, এ লাইব্রেরী থেকে সকল স্তরের শিক্ষার্থীরা কৃষি, স্বাস্থ্য, দেশের ইতিহাস, এমনকি পত্রিকা পড়ার সুযোগ পাবে এ চর লাইব্রেরীর মাধ্যমে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সফিকুল ইসলাম সফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ/ ১২-১১-১৫

,