সোনামসজিদ বন্দর সড়কের বেহাল দশায় বিঘ্ন হচ্ছে পণ্য পরিবহন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ জিরো পয়েণ্ট থেকে শিয়ালমারা বিজিবি ক্যাম্প ও কানসাট-সোনামসজিদ মহাসড়কের বেহাল দশার কারণে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের ব্যবসা বাণিজ্যে বিঘ্ন  সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক দুটিতে বড় বড় খাদের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন  সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি মহাসড়কের দু’পাশ বেদখল হয়ে থাকার কারণে সড়ক দূর্ঘটনাও বেড়ে চলেছে।
সোনামসজিদ জিরো পয়েণ্ট থেকে শিয়ালমারা বিজিবি ক্যাম্প ও কানসাট-সোনামসজিদ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় খানা-খন্দের সৃষ্টি হওয়ার কারণে রাস্তায় যান চলাচল মারাত্মকভাবে হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কানসাট গোপালনগর মোড় থেকে কানসাট ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেশী খারাপ। এ ১ কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন স্থানে দেবে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কোন কোন স্থানে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বড় বড় ইট ফেলার কারণে ঐসব ইটে বৃষ্টির পানি আটকে গিয়ে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ সময় ভারী যানবাহন চলার কারণে রাস্তা দেবে গিয়ে বেহাল অবস্থা সৃষ্টি করেছে। জানাগেছে, সোনামসজিদ স্থলবন্দর থেকে বৃষ্টির সময় পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য ভর্তি ট্রাক মহাসড়ক দিয়ে চলাচলের কারণে রাস্তার বিভিন্ন স্থান দেবে গেছে।
এব্যাপারে সড়ক জনপদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, পানি নিষ্কাশনের রাস্তার পাশে কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার উপর পানি জমে থাকছে। এখানে উল্লেখ্য দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনামসজিদ থেকে প্রতিদিন ৭/৮শ’ পণ্যভর্তি ভারী যানবাহন যাতায়াত করছে। কোন কোন গাড়ীতে রাস্তার ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিনগুণ বেশি অতিরিক্ত লোড নিয়ে ট্রাক চলাচল করার কারণে রাস্তার এ বেহাল দশা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়ক তৈরীর সময় এ রাস্তার ধারণ ক্ষমতা ছিল মাত্র ২৫ মে.টন। কিন্তু বর্তমানে ঐ ধারণ ক্ষমতার রাস্তার উপর দিয়ে সোনামসজিদ স্থলবন্দর থেকে প্রতিদিন এর দ্বিগুন ওজনের পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য ভর্তি ভারী যানবাহন চলাচল করছে। এসমস্ত লোড নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগ সোনামসজিদের অদূরে একটি পোর্টেবল ওয়েব্রীজ বসালেও তা মাত্র একমাস পরেই বিকল হয়ে গেছে। বিকল এ পোর্টেবল ওয়েব্রীজটি আজও মেরামত হয়নি। ফলে অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাকগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ।
অন্যদিকে সোনামসজিদ-বালিয়াদিঘী-কর্ণখালী-মির্জাপুর সড়কের বালিয়াদিঘী মোড় থেকে (পানামার ১নং গেট থেকে ৫নং গেট পর্যন্ত) শিয়ালমারা পর্যন্ত স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের এ রাস্তাটির প্রায় ১ কিলোমিটার ব্যাপী দেড় থেকে আড়াই ফুট পর্যন্ত বড় বড় খাদের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেডের ইয়ার্ডের ভিতর থেকে পণ্য ভর্তি ও খালী কোন ট্রাকই এই ১ কিলোমিটার দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। ফলে পানামা কর্তৃপক্ষের ইয়ার্ডের ভিতরে ট্রাকগুলিকে বাধ্য হয়ে ১নং গেট দিয়েই বের হতে হচ্ছে।
এব্যাপারে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন বিভাগের শিবগঞ্জ উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী আয়েতুল্লাহ্ বেহেস্তীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উক্ত সড়কটি নির্মাণের সময় যে ধারণ ক্ষমতা ছিল ১০/১৫ মে.টন কিন্তু সোনামসজিদ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ঐ রাস্তার পাশে প্রায় ১ কিলোমিটার ব্যাপী পানামা ইয়ার্ড তৈরী করেন। পানামা ইয়ার্ডের ভিতর থেকে বর্তমানে পণ্য ভর্তি ট্রাকগুলি এ ধারণ ক্ষমতার বেশী পণ্য রাস্তার উপর দিয়ে যাতায়াত করার কারণে দেড় থেকে আড়াই ফুট পর্যন্ত গর্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে ঐ রাস্তাটির প্রায় ১ কিলোমিটার চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তাটির বেহাল দশা ও পুনঃনির্মাণের অর্থ বরাদ্দ চেয়ে কয়েকবার নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও আজ অবধি কোন বরাদ্দ আসেনি।
উক্ত সড়কের ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক গত ২৩ জুলাই সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকাতে রাস্তাটি জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করার প্রয়োজন উল্লেখ করে একটি পত্র প্রেরণ করেছেন। এখন এই পত্রের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দিকে তাকিয়ে আছেন বন্দর সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয় জনগন।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২৭-০৮-১৫

,