অবরোধে সংহিসতা, প্রতিরোধে অভিযান ॥ শিবগঞ্জে ২৪ দিনে ঝরে গেল চার প্রাণ

বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ ও হরতাল কর্মসুচিকে ঘিরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ  উপজেলা  সন্ত্রাসের জনপদ হিসাবে পরিচিত লাভ করলে বর্তমানে অনেকটা শান্ত। তবে, চলতি অবরোধ কর্মসুচিতে এ পর্যন্ত চারটি প্রাণহানি, ১৫ জনের হাতপায়ের রগ কাটা, বাড়ি ঘরে আগুন, ভাঙ্গচুর, পরিবহনে দফায় দফায় হামলায় শিবগঞ্জের জনমনে এখনো আত্মংক কাটেনি।
শুধু তাই নয় সোনামসজিদ স্থল বন্দর থেকে ছেড়ে আসা পন্যবাহী ১০টি পুড়ানো হয়েছে, ভাংচুর হয়েছে আরে ২৫টি। তাছাড়া বন্দরের সবমিলিয়ে প্রায় ৫হাজার মানুষ উপার্জন থেকে বঞ্চিত থেকেছে প্রায় দুই সপ্তাহ। শিবগঞ্জে হত্যাকান্ডের শিকার ব্যক্তিরা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত মুকুল ও স্কুল পড়–য়া ছাত্র রকী  ও বিএনপি সমর্থিত ছাত্রদলনেতা মতিউর ও জমসেদ।
সূত্র মতে গত ৫ জানুয়ারী ২০ দলের কর্মসুচির নিয়ে উত্তেজনার ফলে স্থানীয় প্রশাসন কানসাট ও শিবগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ধারা জারী করলেও  বিএনপি জামায়াত কর্মীরা কানসাট গোপালনগর মোড়ে কাল পতাকাসহ মিছিল বের করলে আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনী বাধা দিলে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষে বিএনপি সমর্থিত ্জমসেদ গুলিতে নিহত হয় এবং আওয়ামীলীগ সমর্থিত মেহেদী হাসানসহ আহত হয় ৩৫/৪০জন।  এ সময় কানসাট  ও শিবগঞ্জ বাজারে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরিতহয়। তারপর থেকে চলছে টানা অবরোধ ও মাঝে মাঝে হরতাল।
গত  ৯ জানুয়ারী রাতে মোবারকপুর হতে আওয়ামীলীগের ১০জন কর্মী ভুটভুটি যোগে  কানসাট  আসার পথে বিয়েনবাজার এলাকায় দূবৃর্ত্তরা পিটিয়ে হত্যা করে  যুবলীগ কর্মী কর্মী মুকুল কে  আহত করে আরো ৭/৮জনকে। এ সময় ২০ দলেরও কয়েকজন আহত হয়।
১৫ জানুয়ারী দুপুরে শিবগঞ্জ পৌর এলাকার মহদিপুরের একটি আমবাগানে অবরোধকারী দূবৃর্ত্তরা পিটিয়ে  স্কুল ছাত্র ও ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনের ছেলে নবম শ্রেণীতে পড়ৃয়া ছাত্র মোঃ রাজন আলী রকি (১৪)কে পিটিয়ে আহত করলে  রাজশাহী মেডিকাল কলেজহাসপাতারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জানুয়ারী রাতে মারা যায় সে। এছাড়া ১৫ জানুয়ারী শ্যামপুর নারী কল্যান স্কুলের কাছে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া শ্যামপুর ইউনিয়ন ছাত্র দলের সহ সভাপতি মতিউর রহমান এম সেদিন  ১৬ জানুয়ারী ভোর রাতে খড়কপুর এলাকায় র‌্যাবের সাথে কথিত বন্ধুক যুদ্ধে মারা যায় ।
অন্যদিকে বিভিন্ন ঘটনায় শিবগঞ্জ উপজেলাতেই প্রায় ১৫ জনের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা। তাছাড়া বিভিন্ন ঘটনায় আহত হয়েছে আরো অনেকে। অন্যদিকে গত ১৫ জানুয়ারী জননিরাপত্তার স্বার্থে য়ৌথবাহিনী ধোপপুকুর, শ্যামপুর, রসুলপুর মোহদীপুর মুসলিমপুর সহ বিভিন্ন অভিযানের সময় প্রায় ৩০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর হয়েছে। এ নিয়ে চলছে বিতর্কের ঝড়। ২০ দলীয় অবরোধকারী ও বাড়ির মালিকদের ভাষ্যমতে সরকার দলীয় দূবৃর্ত্তরা যৌথবাহিনীর সহযোগিতায় এ মামলা চালিয়েছে  তারা আরো দাবী করেন যে একমাত্র আওয়ামীলীগ সমর্থিত সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমরা বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্রে আশ্রয় নেয়া শুরু করেছি।
অন্যদিকে শিবগঞ্জ থানার ওসি মইনুল ইসলাম বলেন আমাদের সহযোগিতায় কেউ কোন বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেনি এবং আমরা কোন মানুষকে হয়রানী করিনি। বরং আমরা শুধু জনগনের নিরাপত্তার জন্য অভিযান চালিয়ে দূবৃর্ত্তদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনেছি।
সরজমিনে এ সমস্ত এলাকায় গিয়ে  শিবগঞ্জ পৌরসভার সভাপতি আতিকুল ইসলাম  ও সম্পাদক কারিমুল ইসলাম রাজেন, জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি তোহিদুল আলম টিয়া  ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাডঃ আতাউর রহমান ও মনাকষা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগরে সভাপতি আব্দুস সোবহান ও সাধারন সম্পাদক  সারওয়ার জাহান ও সাধারন সমর্থকদের সাথে আলোচনা করলে তারা বলেন ২০১৩ সালের ২৮ফেব্রায়ারী থেকে এ পর্যন্ত  জামায়াতশিবির ও বিএনপি আন্দোলনের নামে বিভ্ন্নি ধরনের নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছেই যার ফলে শিবগঞ্জে সাধারন জনগন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এবং উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, অন্দোলন দমনের নামে সরকার যৌথবাহিনী এবং সেই সঙ্গে তাদের দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে বিএনপি জামায়াতের লোকজনের বাড়িতে হামলা, ভাঙ্গচুর ও অগ্নি সংযোগ করছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সফিকুল ইসলাম সফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ/ ২৫-০১-১৫