শিক্ষার আলো জ্বালাতে চা বিক্রেতা রফিক গড়েছেন পাঠশালা


কীভাবে চলছে স্কুল পরিচালনার খরচ জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম জানান, বাচ্চাদের কাছ থেকে মাসে ২০ ও ৪০ টাকা করে তোলা হয়। অবশ্য অনেকেই তা দিতে পারে না। ৫০০ থেকে হাজার টাকা উঠলে তা শিক্ষক মরিয়মকে দেন তিনি। তিনি আরও জানান, কোনো মাসে শিক্ষক মরিয়মকে কিছুই দেয়া সম্ভব হয় না। রফিক বলেন, শহরের শাহ নেয়ামতুল্লাহ কলেজের সামনে আমার একটা চায়ের দোকান আছে, সেখানে চা বিক্রি করে যা আয় করি, তা থেকে কোনো রকমে আমার সংসার চলে। সেইসঙ্গে এ স্কুলের খরচও চলে। তিনি আরও জানান, এখনও স্কুলের টিন কেনা বাবদ ৮ হাজার টাকা দোকানে বাকি রয়েছে।
চা বিক্রেতা রফিকের কাছে আবারও প্রশ্ন ছিল, ১০ বছরের জন্য লিজ নেয়া এ জমি তো মেয়াদ শেষে মালিক নিয়ে নেবে। তখন স্কুলের কী হবে?
তিনি বলেন, আমি যদি স্কুলটি ভালোভাবে দাঁড় করাতে পারি, তাহলে ১০ বছর পর এ জমি স্কুলেরই হবে। তিনি আশাবাদী, গ্রামবাসী চাঁদা তুলে হলেও জমিটি স্কুলেরই করে নেবে। যদি তা নাও হয়, তাহলে অন্তত সরকার জমিটি ক্রয় করে স্কুলটি চালিয়ে নিতে সহযোগিতা করবে। রফিক আরও জানান, এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি আর্থিক অনুদান তিনি পাননি, সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগেই তিনি স্কুলটি চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এ বছর শহরের শাহ নেয়ামতুল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলামের সহযোগিতায় প্রথম শ্রেণীর জন্য নতুন বই উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে পেয়েছেন। সবার সহযোগিতা পেলে বাচ্চাদের জন্য বেঞ্চ ও চেয়ার-টেবিল কেনা সম্ভব হবে। আরও একজন শিক্ষক দরকার, তবে কোনো টাকা-পয়সা ছাড়া কেউ আসতে চায় না। তিনি হাল না ছেড়ে বলেন, অবশ্যই একদিন সবার সহযোগিতা পেলে আমার স্বপ্ন সফল হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সাত্তার জানান, এখন কারও ব্যক্তিগতভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করার সুযোগ নেই। সরকার প্রয়োজন মনে করলে সেখানে বিদ্যালয় করবে। তবে সোনামণি পাঠশালার বিষয়টি জানতাম না আমি, এখন বিষয়টির খোঁজ নেব। তিনি জানান, সেখানে যদি আরও বই প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে আমরা বই সরবরাহ করতে পারি। আমাদের কাছে এখনও অনেক বই আছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২২-০১-১৪